সিলেট জুড়ে ফ্রি ইন্টারনেট, পাসওয়ার্ড ‘জয় বাংলা’
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের প্রথম ‘ওয়াইফাই সিটি’ হিসেবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে সিলেট নগরী। নগরীর ১২৬টি এক্সেস পয়েন্টে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা চালুর মধ্য দিয়ে ‘ওয়াইফাই সিটি’ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে সিলেট। যার মাধ্যমে নগরীর ১৭৪টি এলাকার মানুষ পেতে যাচ্ছে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা।
এরই মধ্যে নগরীর ১২৬টি স্থানে রাউটার স্থাপন করা হয়েছে। সেইসাথে চলছে সংযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আসলাম উদ্দিন।
তিনি জানান- নগরীর ১৭৪টি এলাকা মানুষকে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা দিতে ১২৬টি স্থানে রাউটার স্থাপনের কাজ শেষ। এখন চলছে সংযোগ স্থাপনের কাজ। যে এলাকায় সংযোগ স্থাপন হচ্ছে, সেখানের মানুষ মাঝে মাঝে এর সেবাটাও নিতে পারছে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই ফ্রি ইন্টারনেট সেবার আওতায় আসছে সিলেট নগরী, যা দেশের মধ্যে প্রথম। নগরীতে ফ্রি ইন্টারনেট সেবা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এবং এর তত্ত্বাবধানে থাকবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে সিলেটকে ‘ওয়াইফাই সিটি’ আখ্যা দিয়ে এর ইউজার নেম ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ও পাসওয়ার্ড হিসেবে জাতীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা’ ঘোষণা করেছেন।
আর ‘ওয়াইফাই সিটি’ হিসেবে সিলেটের যাত্রা শুরুর মধ্য দিয়ে সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের আরেকটি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ হলো বলে মনে করছেন সিলেটের মানুষ।
নির্বাচনের আগে তিনি ‘আলোকিত উন্নত সিলেট’র যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তাতে সিলেটকে একটি স্মার্ট নগরী হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ছিল। সে লক্ষ্যে পুরো নগরীকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা, ‘ওভারহেড ক্যাবল লাইন’ অপসারণ করে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ করাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এখন দ্রুত এগিয়ে চলছে। এসব উন্নয়ন কাজ শেষ হলে সিলেট পুরোপুরি স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর হবে বলে মনে করছেন সিলেটের মানুষ।
সিলেটের যে সকল স্থানে ফ্রি ওয়াইফাই-
চৌকিদেখিতে ১টি, আম্বরখানা পয়েন্টে ৪টি, দরগা গেইটে ২টি, চৌহাট্টায় ৩টি, জিন্দাবাজারে ৪টি, বন্দরবাজার ফুটওভার ব্রিজ এলাকায় ৩টি, হাসান মার্কেট এলাকায় ৫টি, সুরমা ভ্যালি রেস্ট হাউস এলাকায় ২টি, সার্কিট-হাউস জালালাবাদ পার্ক এলাকায় ৩টি, ক্বিন ব্রিজের দুই প্রান্তে ৬টি, রেলওয়ে স্টেশনে ৪টি, বাস টার্মিনালে ৩টি, কদমতলী পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৫টি, হুমায়ুন রশীদ চত্বরে ৩টি, আলমপুর পাসপোর্ট অফিস এলাকায় ২টি, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় এলাকায় ৩টি, সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ২টি, উপশহর রোজভিউ পয়েন্টে ২টি, শাহজালাল উপশহর ই-ব্লক ও বি-ব্লকে ১টি করে ২টি, টিলাগড় পয়েন্টে ৩টি, এমসি কলেজ এলাকায় ২টি, শাহী ঈদগাহ এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া এলাকায় ৩টি, কুমারপাড়া সড়কে ২টি, দক্ষিণ বালুচরে ১টি, টিচার্স ট্রেনিং কলেজে ১টি এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে ১টি এক্সেস পয়েন্ট থাকবে।
এছাড়াও সিলেট নগরীর নাইওরপুল পয়েন্টে ২টি, মিরাবাজার সড়কে ১টি, রায়নগর এলাকায় ১টি, সোবহানীঘাট পুলিশ স্টেশন এলাকায় ২টি, ধোপাদিঘীরপাড় বঙ্গবীর ওসমানী শিশু উদ্যানে ১টি, বন্দরবাজার জামে মসজিদ এলাকায় ২টি, নয়াসড়ক পয়েন্ট ও সংলগ্ন এলাকায় ৪টি, কাজীটুলা এলাকায় ২টি, চৌহাট্টা সড়কে ৩টি, হাউজিং এস্টেট সড়কে ১টি, সুবিদবাজারে ১টি, মিরের ময়দানে ১টি, পুলিশ লাইন সড়কে ১টি, রিকাবীবাজার জেলা স্টেডিয়ামে ২টি, মদন মোহন কলেজ এলাকায় ১টি, মির্জাজাঙ্গাল সড়ক এলাকায় ২টি, পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট এলাকায় ১টি, খুলিয়াপাড়া এলাকায় ১টি, নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি এলাকায় ১টি, তালতলা হোটেল গুলশান এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সেতু এলাকায় ১টি, কাজিরবাজার সড়কে ২টি, খোজারখলা সিলেট টেকনিক্যাল কলেজ এলাকায় ১টি, বাগবাড়ি ওয়াপদা মহল্লা এলাকায় ১টি, পাঠানটুলায় ১টি, মদিনা মার্কেট পয়েন্টে ২টি, শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে ২টি এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজ এলাকায় ১টি এক্সেস পয়েন্ট রয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এসব এক্সেস পয়েন্টের প্রতিটিতে একসঙ্গে ৫০০ জন যুক্ত থাকতে পারবেন। এরমধ্যে একসঙ্গে ১০০ জন উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। প্রতিটি এক্সেস পয়েন্টের চতুর্দিকে ১০০ মিটার এলাকায় ব্যান্ডউইথ থাকবে ১০ মেগাবাইট/সেকেন্ড।