রাজশাহীর পদ্মায় দুর্লভ পাতি মার্গেঞ্জার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২০; সময়: ৯:৫০ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীর পদ্মায় দুর্লভ পাতি মার্গেঞ্জার

আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, রাজশাহী : বাংলাদেশে খুবই অনিয়মিত দেখা যায়, এ জন্য এর বাংলা নামই রাখা হয়নি। ইংরেজি নাম ‘কমন মার্গেঞ্জার’। যাঁরা পাখি চেনেন, তাঁরা মার্গেঞ্জার নামেই একে চেনেন। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ-এ ও একে ‘পাতি মার্গেঞ্জার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

চোখ, পা ও পায়ের পাতা লাল এবং উজ্জ্বল লাল-কমলা রঙের এই হাঁসের বৈজ্ঞানিক নামের অর্থ রাজহংসী। পাহাড়ি খরস্রোতা নদীর এই হাঁসকে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে প্রথমবারের মতো দেখা গেছে। তবে পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে এই হাঁসকে তৃতীয়বারের মতো দেখা গেল।

গত ২৯ ডিসেম্বর বিকেলের রোদটা পড়ে আসছিল। অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান রাজশাহীতে এসেছিলেন ‘বৈকাল টিল’ নামের আরেক জাতের দুর্লভ হাঁসের ছবির সন্ধানে। ৭ ডিসেম্বর রাজশাহীর পাখিপ্রেমী নূর-এ-সাউদ পদ্মা নদীতে বৈকাল টিল বা বাংলায় ‘বৈকাল তিলিহাঁস’-এর দেখা পেয়েছেন।

এই খবর শুনে ঢাকা থেকে আসেন মনিরুল এইচ খান। সঙ্গে রয়েছেন নূর-এ-সাউদ ও পাখিপ্রেমী চিকিৎসক মঈনুল আহসান। বিকেল ফুরিয়ে আসছে কিন্তু তাঁরা বৈকাল তিলিহাঁসের দেখা পাচ্ছেন না। এমন সময় নূর-এ-সাউদের চোখে পড়ে নতুন জাতের এক জোড়া হাঁস। রাজশাহীতে আগে এই হাঁস দেখা যায়নি।

মনিরুল এইচ খান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে এই পরিযায়ী পাখি অনিয়মিত। সাম্প্রতিক কালে এটিকে তৃতীয়বারের মতো দেখা গেল। এর আগে দুবার ঠাকুরগাঁওয়ে দেখা গেছে। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ, পাখি খ-২৬-এ বলা হয়েছে, পাতি মার্গেঞ্জার বাংলাদেশে অনিয়মিত পাখি।

শীতকালে ঢাকা বিভাগের যমুনা নদীতে দেখা গেছে। সিলেট বিভাগে থাকার একটি পুরোনো তথ্যও রয়েছে। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ায় এর বৈশ্বিক বিস্তৃতি। এশিয়ার মধ্যে পাকিস্তান, ভারত, নেপাল ও ভুটানে দেখা যায়।

পাতি মার্গেঞ্জার প্রবহমান নদী ও নালায় বিচরণ করে। স্রোতের বিপরীতে পানির নিচে ডুব দিয়ে মাছ ধরে খায়। এর খাদ্যতালিকায় মাছ ছাড়াও রয়েছে জলজ পোকামাকড়, চিংড়ি, শামুকজাতীয় প্রাণী, ব্যাঙ, পাখি, খুদে স্তন্যপায়ী ও লতাপাতা। জুন মাসে প্রজনন ঋতুতে সাইবেরিয়া ও তিব্বতে পুরুষ হাঁস ‘ক্রেহ ক্রেহ’ স্বরে ডাকে। স্ত্রী হাঁস একটিমাত্র শব্দে ডাকে ‘ক্রক’, তবে শীতের আবাসে এরা কদাচিৎ ডাকে।

গাছের প্রাকৃতিক গর্তে এরা আবর্জনা ও কোমল পালকের স্তূপ বানিয়ে ডিম পাড়ে। ডিমের রং পীতাভ। সংখ্যায় ৬ থেকে ১৭টি হয়। ২৮ থেকে ৩২ দিনে ডিম ফোটে। সূত্র- প্রথম আলো

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে