রেলে আরো আসছে ১৪০ ইঞ্জিন ও ৬০০ বগি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দেশের প্রতিটি জেলায় রেলসেবা পৌঁছে দিতে উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রায় ৬ লাখ কোটি টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরে সেসব পরিকল্পনার বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। বিশ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনায় দেশব্যাপী রেলের আধুনিকায়নই হবে না, চলবে দ্রুত গতির বুলেট ট্রেন। ১০ বছর আগে নেয়া মাস্টার প্ল্যানের ধারাবাহিকতায় বেড়েছে নতুন রেল লাইন, ইঞ্জিনসহ পণ্যবাহী ওয়াগন।
দীর্ঘদিন বিনিয়োগ বঞ্চিত রেলখাত একেবারেই ধসে পড়ে ১৯৯১ সালে। ছাঁটাই করা হয় ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। নানা অব্যবস্থাপনায় কমতে থাকে রেল লাইন, বন্ধ হয়ে যায় কয়েকশ’ স্টেশন। বগি আর ইঞ্জিনের অভাবে বন্ধ হয়ে যায় বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল।
মৃতপ্রায় রেলকে বাঁচাতে ২০১১ সালে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। নেয়া হয় দু’দশকের মহাপরিকল্পনা। ৫ বছর করে ৪ ভাগে বিভক্ত সেই মহাপরিকল্পনায় শতাধিক প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। ১০ বছরে নির্মিত হয়েছে ৩৮১ কিলোমিটার নতুন রেলপথ, ৩৪৭টি রেল সেতু। কেনা হয়েছে ১৪০টি ইঞ্জিন, প্রায় ৪০০টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ। চালু হয়েছে ১৩৫টি নতুন ট্রেন। নিয়োগ দেয়া হয়েছে ১৪ হাজার নতুন কর্মী।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমাদের যে প্রকল্পগুলো চলমান সেগুলো বাস্তবায়ন হলে আরও ১২৬৮ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মিত হবে। সচিব বলেন, বাংলাদেশ থেকে রেল বের হয়ে মিয়ানমার হয়ে এশিয়ার অন্যান্য দেশে যাবে। উন্নয়ন মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে শুধু যাত্রীসেবায় নয়, বিশ্ব বাজারে অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করছেন রেল কর্মকর্তারা।
রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা পরিবহনে সমস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার অংশীদার হিসেবে রেল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারব। মন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে চলমান ৩৬টি প্রকল্প যার সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। নতুন করে নির্মাণ করা হচ্ছে এক হাজার ২৬৮ কিলোমিটার রেল লাইন, ৩৫৮টি রেল সেতু, কেনা হবে ১৪০টি ইঞ্জিন, ছয় শতাধিক বগি ও এক হাজার পণ্যবাহী ওয়াগন।
তিনি বলেন, নির্মাণ করা হবে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ লাইনের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলে রেলের সম্প্রসারণ ঘটার পাশাপাশি ট্রেন চলবে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার ও কক্সবাজার থেকে মিয়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত।
মন্ত্রী বলেন, ৩০০ কিলোমিটার গতির ট্রেন পরিচালনা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীতে পাতাল রেল নির্মাণের অনুমোদন হয়ে গেছে। প্রকল্প নেয়া হয়েছে ট্রান্স এশিয়া রেল কমিউনিকেশনের, যার আওতায় বাংলাদেশ থেকে রেল পথে যাওয়া যাবে ভারত-মিয়ানমার-চীন ভুটানসহ এশিয়ার কয়েকটি দেশে।