একমাস পরও রুম্পার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে ক্লু খুঁজছে পুলিশ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২০; সময়: ১২:৪২ অপরাহ্ণ |
একমাস পরও রুম্পার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে ক্লু খুঁজছে পুলিশ

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার লাশ উদ্ধারের এক মাস পরও তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে ক্লু খুঁজছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। কোনও ক্লু না পাওয়ায় মামলার তদন্ত স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

গত ৪ ডিসেম্বর রাত ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর ভবনের সামনে থেকে অজ্ঞাত এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৫ ডিসেম্বর তার পরিচয় শনাক্ত হয়। এই ঘটনায় ডিএমপির রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলাটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে।

মামলার তদারকি কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের রমনা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপকমিশনার শামসুল আরেফিন বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা রুম্পার বন্ধু আব্দুর রহমান সৈকতকে গ্রেফতার করেছি। তবে তার কাছ থেকে কোনও তথ্য আমরা পাইনি। ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনও সিসি ক্যামেরার স্পষ্ট ফুটেজ পাইনি। ঘটনার সময় রুম্পা তার মোবাইল ফোনও বাসায় রেখে যায়। তাই তার মোবাইল থেকেও কোনও ক্লু পাওয়া যায়নি। আমরা পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত রিপোর্টও এখনও পাইনি। মামলা তদন্তে বলার মতো অগ্রগতি নেই।’

তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রুম্পা আয়েশা শপিং কমপ্লেক্স ভবন থেকে পড়েই মৃত্যু বরণ করেছেন। তবে তাকে সেখান থেকে কেউ ফেলে দিয়েছে, নাকি সে নিজে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

রুম্পার বাবা পুলিশ পরিদর্শক রোকন উদ্দিন জানান, তদন্তে এখন পযন্ত কোনও অগ্রগতি নেই। ঘটনার পর রুম্পার সহপাঠীদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এরপর আর তেমন অগ্রগতির তথ্য তার কাছে নেই। তবে তিনি মেয়ের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ জানতে চান।

রুম্পা পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর শান্তিবাগের বাসায় থাকতেন। সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি শান্তিবাগ এলাকায় দুটি টিউশনি করতেন। ৪ ডিসেম্বর টিউশন শেষে সন্ধ্যায় বাসার সামনে যান। মোবাইল ফোনে মাকে ফোন করে চাচাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম সুমনকে দিয়ে এক জোড়া স্যান্ডেল পাঠাতে বলেন। সুমন স্যান্ডেল নিয়ে এলে তা পরিবর্তন করেন তিনি। এর পর নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, আঙটি, হাতঘড়ি ও ব্যাগ বাসায় পাঠিয়ে বের হয়ে আসেন। পরে রাত ১১টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ নম্বর ভবনের সামনে থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তারাই বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা করে। পরদিন রাতে লাশের পরিচয় পাওয়া যায়। এরপর মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

ডিবি সন্দেহভাজন হিসেবে রুম্পার বন্ধু আব্দুর রহমান সৈকতকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়। সৈকতের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার কাছিহাটা মুন্সীবাড়ি। বর্তমান বাসা রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তিলপাপাড়ায়।

তদন্ত সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, সৈকত একসময় সিদ্ধেশ্বরীতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুবাদে রুম্পা ও সৈকতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়। ঘটনার প্রায় সাত মাস আগে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আর্থিক সংকটের কারণে সৈকত স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ভর্তি হন।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে