ধর্ষণের শিকার ঢাবির সেই ছাত্রীর গলায় নখের আঁচড়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২০; সময়: ৪:৩০ অপরাহ্ণ |
ধর্ষণের শিকার ঢাবির সেই ছাত্রীর গলায় নখের আঁচড়

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর কুর্মিটোলায় গণধর্ষণের শিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সেই ছাত্রীর ফরেনসিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ফরেনসিক পরীক্ষার পর তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা করণীয় নির্ধারণে বৈঠক করছেন। সোমবার দুপুরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম।

তিনি জানান, মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর রেডিওলজি (বয়স নির্ধারণ) পরীক্ষা করা হবে। এছাড়া বোর্ডের সিদ্ধান্তক্রমে আরও কিছু পরীক্ষা দেয়া হয়েছে, সেগুলো সম্পন্ন করা হবে।

ফরেনসিক পরীক্ষায় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানান ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। এক না একাধিক ব্যক্তি ধর্ষনে জড়িত তা নিশ্চিতে ওই ছাত্রীর কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে বলেও জানান তিনি।

এছাড়া ছাত্রীর গলায় নখের আঁচড় পাওয়া গেছে। তার নাকেও নখের আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

ওই ছাত্রী অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত বলে জানান ডা. বিলকিস বেগম। তিনি বলেন, ফরেনসিক পরীক্ষায় তার গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মানে ঘটনার সময় ধর্ষক তার গলা চেপে ধরেছিল। এই কারণে চিকিৎসাধীন মেয়েটির কথা বলতে একটু কষ্ট হচ্ছে। বোর্ডের সদস্য নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে দেখেছেন।

৭ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডের একটি সূত্র জানায়, ছাত্রীর গলার দুই পাশে নখের আঁচড় দেখা গেছে। গলা চেপে ধরার কারণে কথা বলতে তার কষ্ট হচ্ছে। নাকের উপরেও নখের চিহ্ন পাওয়া গেছে।

অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের সেই ছাত্রীর ধর্ষণের আলামত মিলেছে বলে জানিয়েছেন ফরেসনসিক চিকিৎসক বিভাগীয় প্রধান সোহেল মাহমুদ।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর কুর্মিটোলায় বান্ধবীর বাসায় যেতে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে ওঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। বাস থেকে কুর্মিটোলা এলাকায় নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন তার মুখ চেপে ধরে। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাকে উপর্যুপরি ধর্ষণ করা হয়। রাত ১০টার দিকে চেতনা ফেরার পর তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। বান্ধবীকে ঘটনা জানান। এরপর সহপাঠীরা তাকে আবাসিক হলে নিয়ে আসেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়।

রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক হাসপাতালে তাকে যান। তারা নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন।

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাহান গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ ঘটনাটি জেনেছে। ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলতে পুলিশ হাসপাতালে গেছেন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ওই ছাত্রী বিবিসিকে বলেন, রোববার সন্ধ্যায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে বান্ধবীর বাসায় যাচ্ছিলেন। উদ্দেশ্য একসঙ্গে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা এলাকায় বাস থেকে নামেন। সেখান থেকে অজ্ঞাত কয়েক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।

নির্যাতনের একপর্যায়ে জ্ঞান ফিরে পান ওই ছাত্রী। পরে পাশবিক নির্যাতনে আবারও জ্ঞান হারান। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরে ওই ছাত্রীর। তিনি তার বান্ধবীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্যাম্পাসে যান। পরে তার বন্ধুরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে