যেসব খাবারে ক্যানসার হয়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৬, ২০২০; সময়: ৪:৩৮ অপরাহ্ণ |
যেসব খাবারে ক্যানসার হয়

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : যারা ভোজনবিলাসী তাদের জন্য দুঃখজনক হলেও সত্য। সবচেয়ে ভালো স্বাদযুক্ত খাবারগুলো সবচেয়ে খারাপ। এর কারণ প্রাকৃতিকভাবে খাবার থেকে আমরা যে স্বাদ পাই সেটি কৃত্তিমভাবে তৈরি করি করা খাবারে কখনো পাওয়া যায় না। প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া খাবার কৃত্রিমভাবে এমন স্তরে নিয়ে যাওয়া হয় যে খাবারের মান নষ্ট করে ক্ষতিকর দিক তৈরি হয়। যা খেলে স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।

বিশ্বের নামীদামী মেগা ফুড উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন খাবার প্রক্রিয়াজাত করে বাজারে ছাড়ে। দুর্ভাগ্যক্রমে এই খাবারগুলো ক্যান্সার সৃষ্টিকারী। খাবারগুলোর লোভনীয় এবং সুস্বাদু হলেও প্রতিদিনের জীবনচারণকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এসব প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীর সহ্য করতে পারে না। আসুন জেনে নেওয়া যাক ক্যানসার সৃষ্টিকারী কিছু খাবার।

গরম পানীয়
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত খুব গরম পানীয় পান করলে খাদ্যনালীর ক্ষতি করতে পারে এবং গলায় ক্যানসার হতে পারে। শীতকালে গরম স্যুপ, কফি ইত্যাদি খেতে খুব ভালো লাগে। কিন্তু কত গরম ক্ষতিকর? বিজ্ঞানীরা প্রায় ৬৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (১৪৯ এফ) বলেছেন, যা আমাদের ক্ষতি করে।তাই এত গরম চা, কফি পান হতে বিরত থাকুন।

কৃত্রিম সুগার-মিষ্টি
ওজন কমাতে অনেকে চিনির পরিবর্তে কৃত্তিম মিষ্টি খেয়ে থাকেন।এগুলো রক্তের শর্করাকে নিয়ন্ত্রণ করে না। এছাড়া দেহকে সঠিকভাবে দৈনিক ক্যালোরি খরচ করতে বাঁধা দেয়। কৃত্রিম মিষ্টিগুলোতে রাসায়নিক বিশেষত অ্যাস্পার্টাম থাকে যা দেহে ডিকেপি নামে একটি মারাত্মক বিষে পরিণত হয়। হজমের সময়, ডিকেপি আরও ক্যানসারজনিত রাসায়নিকগুলো প্রকাশ করে।

কর্ণ স্যুপ
বাসায় তৈরি কর্ণস্যুপে সমস্যা নেই।কিন্তু বাজারে কিনতে পাওয়া প্যাকেটজাত কর্ণস্যুপ সাধারণভাবে পরিশোধিত। চিনি এবং বিশেষত এইচএফসিএস থাকে যা প্যাকেজযুক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে থাকে। যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

জিএমও খাবার
জেনেটিক্যালি সংশোধিত খাবারগুলোর কীটের তুলনায় ল্যাবে ডিজাইন করা খাবার অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই খাবারগুলো মানুষের পক্ষে মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। বিশেষ করে আমেরিকাতে, প্রায় সমস্ত শস্য (সয়াবিন, গম এবং ভুট্টা) জিএমও হয়। তবে ইউরোপের অনেক দেশগুলো নিষিদ্ধ করেছে। ইঁদুর নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে ১০ দিন এই খাবার দেওয়ার পর প্রাক-ক্যান্সারযুক্ত কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাদা আটা
শোধনে প্রক্রিয়াজাত করে সাদা আটা তৈরি করা হয়। যা প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া বেশিরভাগ পুষ্টিকে ধ্বংস করে দেয়। সবচেয়ে খারাপ মিলগুলো। তারা ময়দাকে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে ব্লিচ করে সাদা করে। এমন একটি রাসায়নিক যা খুবই মারাত্মক। এসব পণ্যতে খুব উচ্চ মাত্রায় গ্লাইসেমিক রয়েছে। যা রক্তে শর্করার এবং ইনসুলিনের মাত্রাকে স্পাইক করে। শরীরের এই অবস্থাটি ক্যানসার কোষগুলো বাড়তে সহায়তা করে। রক্ত ​​প্রবাহে শর্করার উপর টিউমার তৈরি হয়।

পরিশোধিত তেল
উদ্ভিদ তেল স্বাস্থ্যকর। কিন্তু সমস্যাটি হলো এটি প্রাকৃতিকভাবে উৎস থেকে বের করা যায় না। রাসায়নিক নিষ্কাশন প্রক্রিয়া যা হাইড্রোজেনেট করে এবং তেলটিকে আরও বর্ণযুক্ত এবং ডিওডোরাইজ করা হয়। যাতে এটি খুব স্বচ্ছ হয়। হাইড্রোজেনেটেড তেলগুলো আরও দীর্ঘসময় রাখা হয়। যা শরীরের কোষগুলোর গঠন এবং নমনীয়তাকে প্রভাবিত করে। যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

চাষের মাছ
শরীরের জন্য বেশিরভাগ মাছের স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ ফ্যাট প্রয়োজন। তবে চাষের মাছে কীটনাশক, রাসায়নিক, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য কার্সিনোজেনপূর্ণ অপ্রাকৃত খাদ্য দেওয়া হয়। ফলস্বরূপ, তাদের মাছে ক্যানসার সৃষ্টিকারী পিসিবি, পারদ এবং ডাইঅক্সিন তৈরি হয়। দুর্ভাগ্যক্রমে, স্টোরগুলোতে প্রায় ৬০ শতাংশ চাষের মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

আলুর চিপস
চিপসগুলোতে কেবলমাত্র ফ্যাট এবং সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি তা নয়। এগুলোতে কৃত্রিম স্বাদ, প্রিজারভেটিভ এবং খাবারের রঙ রয়েছে। যা শরীরের জন্য খুব ক্ষতিকর। এছাড়া উচ্চতাপে ভাজার জন্য অ্যাক্রিলাইমাইড তৈরি হয় এসব খাবারে। যা এটি একটি স্বীকৃত কার্সিনোজেন যা সিগারেটেও পাওয়া যায়। বুঝতেই পারছেন কেমন ক্ষতিকর।

টিনজাত খাবার
টিনজাত খাবারের সমস্যা হলো স্টোরেজ। প্রায় সমস্ত অ্যালুমিনিয়াম ক্যান ক্যানসারের সাথে যুক্ত। যার ফলে ক্যানে থাকা খাবারে বিসফেনল-এ বা সংক্ষেপে বিপিএ হয় উৎপন্ন হয়। এসব খাবারগুলো খাওয়া খুবই বিপজ্জনক।

সোডা
সাধারণত সোডা হলো উচ্চ মাত্রার চিনি। এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। যা ওজন বৃদ্ধি, প্রদাহ এবং ইনসুলিন প্রতিরোধে কাজ করে। সোডায় কৃত্রিম ও রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। যেমন ডেরিভেটিভ ৪-মেথিমিলিমিডাজল (৪-এমআই), যা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন
পপকর্ন নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে পপকর্নে পিএফও থাকে। যা গ্রহণের ফলে কিডনি, মূত্রাশয়, যকৃত, অগ্ন্যাশয় এবং অণ্ডকোষের ক্যানসার হতে পারে।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে