আইওর ভুলে মাদক মামলার তিন আসামী খালাস

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২০; সময়: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ |

নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : তদন্তকারী কর্মকর্তার ভুলে নাটোরের একটি মাদক মামলার তিন আসামীকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। ত্রুটিপুর্ন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার কারনে আসামীরা খালাস পাওয়ায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আদালতকে অবহিত করারও নির্দেশ দিয়েছেন একই আদালত। ত্রুটিপূর্ণ ওই তদন্ত প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম উদ্ধারকৃত ৪৩৭ বোতল ফেনসিডিল না বলে ৭৩৪ বোতল বলেন। খালাসপ্রাপ্তরা হলো আব্দুল আলীম, মোহাম্মদ রকি ও রফিকুল ইসলাম। সোমবার বিকেলে নাটোরের স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক এই আদেশ প্রদান করেন। নাটোরের স্পেশাল ট্রাইবুন্যাল-২ সূত্রে জানা যায়,সোমবার ছিল নাটোর সদর থানার ৪৩৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের মামলার রায় ঘোষণার দিন। ওই মামলার প্রধান আসামি মো.রকি আদালতের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। রায়ে বিচারক অপরাধের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার আসামি মো.রকি, মো.রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল আলীমকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। আসামি ও তাদের জামিনদারগণকে জামিন নামার দায় হতে অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন যে,‘তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর মো. নজরুল ইসলাম আসামি পক্ষের জেরায় উদ্ধারকরা আলামতের পরিমান ৪৩৭ না বলে ৭৩৪ বোতল বলায় সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। এই সন্দেহের ফলে আসামীগণ খালাস পেতে আইনত হকদার হয়েছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীদের অত্র মামলা থেকে বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্যের কারণেই ৭৩৪ বোতল ফেনসিডিল এর কথা উল্লেখ করেছেন। তার অদক্ষতা,অযোগ্যতা ও দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাসহ (চাকুরী বহিতে নোট প্রদান করতঃ) আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক মর্মেও আদালত মনে করেন বলে রায়ে উল্লেখ করেন। অত্র মামলার কপি পুলিশ সুপার নাটোর,ডিআইজি রাজশাহী ও আইজিপি ঢাকা বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই সাথে তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার একটি কপি আদালতে পাঠাতে বলা হয়।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ২০০৯ সালে নাটোর সদরের হুগোলবাড়িয়া এলাকায় একটি ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি মাইক্রোবাস থেকে ৪৩৭ বোতল ফেন্সিডিল থেকে মোহাম্মদ রকি নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে র‌্যাব। এ ঘটনায় র‌্যাবের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক মহিউদ্দীন নাটোর সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০১০ সালের মামলাটির অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর নজরুল ইসলাম। মামলায় দেয়া ১৬১ ধারার জবানবন্দীতে সাক্ষীরা ৪৩৭ বোতল ফেন্সিডিলের কথা উল্লেখ করলেও অভিযোগপত্রে ৭৩৪ বোতল ফেন্সিডিলের কথা উল্লেখ করা হয়।
মামলার পর্যবেক্ষণে বিচারক সাইফুর রহমান সিদ্দীকী বলেন, ‘তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলা থেকে আসামীদের বাঁচানোন অসৎ উদ্দেশ্য থেকে আলামতের সংখ্যা পরিবর্তন করেছেন। অভিযোগপত্রে আলামতের পরিমাণ নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আসামীরা খালাস পেতে আইনত হকদার।’

মীর নজরুল ইসলাম তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, অভিযোগপত্রের আলামতের সংখ্যার ভুলটি করণিক ভুল এবং অনিচ্ছাকৃত।

সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বলেন, রায়ের কপি প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে