মুজিববর্ষে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২০; সময়: ২:৩১ অপরাহ্ণ |
মুজিববর্ষে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার

মাহফুজুর রহমান রাজ : দেশের আটটি পুরাতন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য ২০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত জরুরী ও ব্যয়বহুল ওষুধ বিনামূল্যে দেবার জন্য। সংবাদটি আমাদের আনন্দিত করেছে।

দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া কাজ করা সংগঠন থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রধান সাবেক স্বাস্থ্য সচিব সিরাজুল খানের নেতৃত্বে আন্দোলন শুরুর পর সরকারের নজরে এসেছে থ্যালাসেমিয়া। কিন্তু আমরা উদ্বিগ্ন এই কারণে যে রোগীদের কল্যাণের পাশাপাশি থ্যালাসেমিয়া রোগী জন্ম নেওয়া বন্ধ করার যে প্রক্রিয়া অর্থাৎ জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সেটা নিয়ে তেমন কিছুই এখনো দৃশ্যমান না।

আটটি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া ব্যবস্থাপনা কমিটি ও তাদের কার্যপরিধি সম্পর্কে যেটি বলা হয়েছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক কারণ থ্যালাসেমিয়া একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। কার্যপরিধির প্রথম চারটি ধারায় বলা হয়েছে থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা নিয়ে কথা। অথচ থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সুস্থ করার কোন চিকিৎসা নেই। এটিকে অবশ্যই থামাতে হবে প্রতিরোধের মাধ্যমে।

পঞ্চম ধারায় বলা হয়েছে, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণার কথা। সেই সাথে বলা হয়েছে স্থানীয়ভাবে হাসপাতালে বাৎসরিক বরাদ্দ থেকে এই কাজটি করতে হবে। অথচ আমরা জানি হাসপাতালে বার্ষিক বরাদ্দ নিতান্তই অপ্রতুল ফলে এই কাজটি করা সম্ভব হবে না।

বর্তমান অপারেশনাল প্ল্যানটি করার সাথে যুক্ত ছিল থ্যালাসেমিয়া নিয়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবসা করা একটি প্রতিষ্ঠান। এভাবেই তাদের নীতি অনুযায়ী রোগীদের জন্য সুবিধা দিয়েছে কিন্তু রোগীর জন্ম নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করার কোন বিষয় এখানে রাখা হয়নি ।

থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে যে থ্যালাসেমিয়া বাংলাদেশ একটি নিরব মহামারি আকার ধারণ করেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞরা এ প্রসঙ্গে বলেছেন যে থ্যালাসেমিয়া কে প্রতিরোধ করা ছাড়া আমাদের কোনো রাস্তা নেই ।

সেই সাথে চট্টগ্রাম থেকে রক্ত রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহেদ আহমেদ চৌধুরি বলেছেন যে, একটি জাতীয় নীতি নির্ধারণের কথা যেখানে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ এবং এর চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত।

তিনটি বিষয়কে সমান গুরুত্ব দেবার কথা বলেছেন রাজশাহীর রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক মোরশেদ জামান। বিশিষ্ট রিসার্চার বিআরএফ এর প্রধান মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন একই ভাষায় কথা বলেছেন ।

ফলে থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে যে বর্তমান অপারেশনাল প্ল্যান সংশোধন করে প্রতিরোধের লক্ষ্যেকে সামনে রেখে কাজ করতে হবে।

লেখক- চিকিৎসক, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে