এসএসসিতে পরীক্ষার্থী কমেছে
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার সারাদেশ থেকে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে, যা গতবারের চেয়ে ৮৭ হাজার ৫৫৪ জন কম। মাধ্যমিক পরীক্ষা সামনে রেখে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “২০১৭ সালে যারা জেএসসি পাস করেছে তারা এবার পরীক্ষা দিচ্ছে। এর সঙ্গে কিছু অনিয়মিত শিক্ষার্থী আছে। ২০১৭ সালে জেএসসিতে পাসের হার কম ছিল এজন্য এবার পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।” আগামী ১-২৫ ফেব্রুয়ারি হবে এসএসসির তত্ত্বীয় পরীক্ষা। এ বছর তিন হাজার ৫১২টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৮৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেবে।
নয়টি সাধারণ বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে এবার ১৬ লাখ ৩৫ হাজার ২৪০ জন পরীক্ষায় বসবে। এরমধ্যে ৭ লাখ ৯১ হাজার ৯১৮ জন ছাত্র এবং ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৩২২ জন ছাত্রী। আর দাখিলে এবার দুই লাখ ৮১ হাজার ২৫৪ জন এবং এসএসসি ভোকেশনালে এক লাখ ৩১ হাজার ২৮৫ জন মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসবে।
এ বছর ১৬ লাখ ৮১ হাজার ৬৮৮ জন নিয়মিত পরীক্ষার্থীর সঙ্গে তিন লাখ ৬১ হাজার ৩২৫ জন অনিয়মিত এবং দুই লাখ ৮২ হাজার ৫৯৪ জন বিশেষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেবে। এছাড়া বিদেশের আটটি কেন্দ্রে ৩৪২ শিক্ষার্থী এসএসসিতে অংশ নেবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
এবারও বহু নির্বাচনী (এমসিকিউ) অংশের উত্তর আগে দিতে হবে। পরে নেওয়া হবে সৃজনশীল/রচনামূলক অংশের পরীক্ষা। দীপু মনি বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই কেন্দ্রে প্রবশে করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে ওই সময়ের পরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল, প্রবেশের সময়, দেরি হওয়ার কারণসহ সব তথ্য রেজিস্ট্রারে লিপিবদ্ধ করে সাথে সাথে শিক্ষা বোর্ডে পাঠাতে হবে।
মন্ত্রী জানান, পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এমএমএসের মাধ্যমে প্রশ্নের সেট কোড জানিয়ে দেওয়া হবে। কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্র সচিব ক্যামেরাবিহীন একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেওয়া হবে। আর অটিস্টিক পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় বেশি দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক, অভিভাবক বা সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
এবার বাংলা দ্বিতীয়পত্র, ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র ছাড়া সব বিষয়ের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়ের ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে পাওয়া নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।
প্রশ্ন ফাঁস রোধে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সব মহলকে প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ জানাব কোনোভাবেই কেউ যেন প্রশ্ন ফাঁসের গুজবে কান না দেন। কিছু প্রতারক চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব রটনা করে, মানুষের সাথে প্রতারণা করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে।”
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ ছাড়াও জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।