স্কুলছাত্র হত্যায় ৪ জনের ফাঁসি
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরের চয়ন একাডেমির অষ্টম শ্রেণির ছাত্র কাউসার হত্যার মামলায় এক দম্পতিসহ চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. নজরুল ইসলাম এ রায় দেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি হুমায়ুন কবির চৌধুরী জানান।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রী ফরিদা, জামির আলী এবং শাহজাহান। আসামিদের মধ্যে জামির আলী পলাতক। অন্য তিন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ের বিবরণে বলা হয়, কাউসারের বাবা মো. ইব্রাহিম আলী কামরাঙ্গীর চরের জাউলাহাটিতে পরিবার নিয়ে থাকেন। সেখানে তার মুদি দোকান আছে।
আসামি শাহজাহান সেখানকার একটি সেলুনে কাজ করতেন। সেখানে আসা-যাওয়ার সুবাদে কাউসারের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। আসামি জামির একবার শাহজাহানকে জানায়, তার টাকা দরকার। এরপরই তারা টাকার জন্য কাউসারকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।
২০১২ সালের ১৬ মে সকাল থেকে ১৭ মে বিকেলের কোনো এক সময় তারা কাউসারকে অপহরণ করে নিয়ে আলতাফের বাসায় খাটের নিচে আটকে রাখে।
পরে চিরকুট পাঠিয়ে এবং মোবাইল ফোনে তারা কাউসারের বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় কাউসারের পরিবার কামরাঙ্গীর চর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
কাউসারের পরিবার পরে ১৯ মে নবাবগঞ্জে অপহরণকারীদের হাতে মুক্তিপণের টাকা তুলে দিলেও তারা অপহরণকারীরা তাকে ফেরত দেয়নি।
এরপর ২৬ মে অপহরণের মামলা করা হয়। মামলাটি পরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তারা জামিনে মুক্তি পায়। এরপর অপহরণকারীরা কাউসারের বাবার কাছে আরো এক লাখ টাকা দাবি করে। ১৫ আগস্ট আসামি জামিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলতাফ, তার স্ত্রী ফরিদা ও শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। আসামিদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণের প্রায় তিন মাস পর ওই বছরের ১৮ অগাস্ট দুপুরে কাউসারের বাসার কাছে দেয়ালঘেরা একটি জমির মাটি খুঁড়ে তার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
পরনের জিন্স প্যান্ট ও গেঞ্জি দেখে কাউসারের দেহাবশেষ শনাক্ত করেন স্বজনেরা।
গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, অপহরণের পরদিন রাতেই কাউসারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা।
আসামিরা জানায়, অপহরণের পরপরই চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে কাউসারকে অচেতন করা হয়। পরদিন বিকেলে চেতনা ফিরে এলে আবারও চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রাতে সে জেগে উঠলে জামির ও ফরিদা তার পা চেপে ধরে এবং আলতাফ বুকের ওপর বসে। আর শাহজাহান শ্বাসরোধে হত্যা করে শিশুটিকে।