পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন পরিচালকরাই
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ব্যাংক খাত থেকে এক লাখ ৭৩ হাজার ২৩১ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন পরিচালকরাই। আবার কেউ কেউ নিয়েছেন নিজেদের মালিকানা থাকা ব্যাংক থেকেও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা ব্যাংক খাতের জন্য হুঁমকি। এতে কতিপয় পরিচালকরা লাভবান হলেও লোকসানে পরছে ব্যাংকের সাধারণ শেয়ার হোল্ডারসহ আমানতকারীরা। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির অভাবসহ রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমতি দেয়াকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ নয় লাখ ৬৯ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। যার ১১ দশমিক ২১ শতাংশই নিয়েছেন ব্যাংক পরিচালকরা। তারা অন্যান্য ব্যাংকের পাশাপাশি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজ ব্যাংক থেকেও নিয়েছেন এসব ঋণ। সম্প্রতি সংসদে অর্থমন্ত্রীর দেয়া তথ্য মতে ২৫টি ব্যাংকের পরিচালকেরা নিজেদের ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। আর অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন, প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা।
ব্যাংকের পরিচালকদের মধ্যে নিজ ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে এবি ব্যাংকের পরিচালকেরা। পরিচালকের কাছে ব্যাংকটির পাওনা রয়েছে প্রায় ৯০৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর পরেই রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। এ ব্যাংকটিতে পরিচালকদের দেনা ৩৬৩ কোটি টাকা।
ইসলামী ব্যাংকের অন্য ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণের পরিমান প্রায় ১৯ হাজার ১৭৬ কোটি টাকা। এক্সিম ব্যাংকে এ ঋণের পরিমান প্রয় ১০ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। আর রাষ্ট্রি মালিকানাধীন জনতা ব্যংকে অন্য ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ প্রায় ১০ হাজার ১২৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ মনে করেন, দেশের আইনে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার সুযোগ থাকলেও নিজের ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া বেআইনি। এতে ব্যাংকগুলোর শেয়ার হোল্ডারসহ হুমকিতে পড়েছে বিনিয়োগকারিদের অর্থ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গর্ভনর বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকির দুর্বলতার কারণেই ঘটছে এসব ঘটনা। রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের অনুমোদনের ফলাফলই হচ্ছে ব্যাংক পরিচালকদের নিয়ন্ত্রণহীন এমন ঋণ, এমনটাই মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর।
তিনি বলেন, ব্যাংকের মালিকানা যাদেরকে দেওয়া হচ্ছে তাঁরা সেই জায়গার বিবেচনায় অতটা দক্ষ নয়। বর্তমান রাজনৈতিক যে প্রেক্ষাপট সেখানে এরাই রাজনীতিকে পরিচালনা করছেন। কাজেই এই প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন না হলে, এটাকে যদি ভাঙ্গা না হয় তাহলে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এটি ভাঙবে না। ব্যাংকের পরিচালকদের অন্য ব্যাংক থেকে ঋণের বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার বলেও মনে করেন তারা।