দুর্গাপুরে পুকুর খননে আদালতের আদেশ মানছে না

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০; সময়: ১০:২৫ অপরাহ্ণ |

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় আবাদী কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে হাইকোর্ট বিভাগের আদশে এখনো বলবৎ রয়েছে। এর পরও দুর্গাপুরে নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে হাজার হাজার বিঘা আবাদী কৃষি জমি। আদালতের আদেশে দুর্গাপুর উপজেলায় আবাদী কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে তাৎক্ষনিক কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু দুর্গাপুরের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতে পুকুর খননে অবাধে ধ্বংস করছে আবাদী কৃষি জমি।

এদিকে, এই অবৈধ পুকুর খননের প্রতিবাদ করায় সাধারণ জমির মালিকরা নানাভাবে হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে। আবাদী কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তার কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। এমনকি অবৈধ পুকুর খননও বন্ধে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন। ফলে এলাকার সাধারণ মানুষ নির্বিকারে ও নির্বিচারে সহ্য করছে অবৈধ পুকুর খননকারীদের অন্যায়, অত্যাচার ও জুলুম।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি চক্র পুকুর খননের জন্য প্রার্থনায় জেলা প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন দাখিল করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদনের নির্দেশ দেওয়া হলে উপজেলা ভুমি প্রশাসন আবেদনকারীর তফসীলীয় সম্পত্তির প্রকৃত জমির শ্রেণি আড়াল করে আবেদনকারীদের চাহিদা মোতাবেক আবাদী কৃষি জমিকে পতিত, অনাবাদী ও নিম্ন জলাভূমি হিসাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। ফলে অবৈধ পুকুর খননকারীরা খুব সহজেই উক্ত প্রদিবেদন সংগ্রহ করে হাইকোর্ট বিভাগে পুকুর খননের প্রার্থনা রীট পিটিশন দায়ের করেন।

তথ্য সূত্রে আরও জানা যায়, ইতিপূর্বে প্রায় ৯০০ একর জমিতে অবৈধ পুকুর খননের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে ১৫০৮৬/২০১৯ ও ১৫০৮৭/২০১৯ নং দুইটি রীট পিটিশন দায়ের করে পুকুর খননের আদেশ প্রার্থনা করলে হাইকোর্ট বিভাগের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ তা গত ৩০/১২/২০১৯ তারিখে শুনানীঅন্তে পুকুর খননের পক্ষে কোন আদেশ না দিয়ে রীট আবেদনকারীদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট দাখিলকৃত পুকুর খননের আবেদনটি ৯০ দিনের মধ্যে নিম্পত্তি করার নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়াও গত ১৯/০১/২০২০ ইং তারিখে হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে দুর্গাপুর উপজেলায় পুকুর খননের প্রার্থনায় একটি রীট পিটিশন দায়ের করায় সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ পুকুর খননের পক্ষে আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু উক্ত উপজেলায় পূর্ববর্তী ১৮০১/২০১৯ নং রীট পিটিশনে গত ২৪/০২/২০১৯ ইং তারিখে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের আদেশ বহাল ও কার্যকর থাকায় তা পরবর্তীতে গত ০৪/০২/২০২০ ইং তারিখে শুনানীঅন্তে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ গত ১৯/০১/২০২০ তারিখের প্রদত্ত আদেশটি প্রত্যাহারের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

দুর্গাপুর উপজেলায় বর্তমান অবৈধ পুকুর খননের ভয়াবহ অবস্থার প্রেক্ষিতে এলাকার সর্বসারধাণের কৃষি জমি সংরক্ষণে হাইকোর্ট বিভাগের ১৮০১/২০১৯ নং রীট পিটিশনের গত ২৪/০২/২০১৯ ইং তারিখের প্রদত্ত আদেশ বাস্তবায়নের জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে