বাজারের বোরো চারার উপরেই ভরসা কৃষকের
আসাদুজ্জামান মিঠু : কৃষি কাজে নতুন নতুন পদ্ধতি আসছে। যন্ত্র দিয়েই চাষাবাদ থেকে শুরু করে কাটা-মাড়াই এবং ঘরে উঠা পর্যন্ত সুবিধা পাচ্ছেন কৃষকেরা। অনেক সময় ও কম লাগছে। সময় কম লাগলেও অনেক কৃষক এমন সুবিধা পেয়ে ইতি মধ্যে পরনির্ভরতা হয়ে পড়েছে।
যন্ত্রে ব্যবহার যতই বাড়ছে ততই রেড়িমেন্ট হয়ে পড়ছেন কৃষকেরা। এতো দিন কৃষকেরা নিজেরাই বীজতলা তৈরি করে চারা তৈরি করতেন এখন সেটাও যেন করতে চাইছেনা বেশির ভাগ কৃষক। ফলে বাজারে আসা রেডিম্যান্ট বোরো চারা দিকে ঝুঁকছেন কৃষকেরা।
বরেন্দ্র অঞ্চলের হাট-বাজারে চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে জমে উঠেছে চারার হাট।
কৃষকেরা শুধু বোরো ধানের জমি রোপনের চাষযোগ্য করে প্রস্তুত করেই চলে আসছে বাজারের চারার হাটে। পরিমাণ মত যার যার মত বোরো চারা ক্রয় করে রোপন করছেন তারা। ঝামেলা ও সময় কম লাগলেও খরচ পড়ছে বেশি।
রাজশাহীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রতিটি জেলার উপজেলা বিভিন্ন বাজারে এই মৌসুমে রোপা বোরো, চারার হাট বসে প্রতিদিন। বোরো চাষের মৌসুমে পৌষ মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু হয় এবং তা ফাল্গুনের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে এই হাট।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রাসরণ আঞ্চলিক অফিসের তথ্য অনুযায়ী,চলতি মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লক্ষ ৭০ হাজার ৯৬৮ হেক্টর জমিতে।
এর মধ্যে রাজশাহী জেলায়, ৬৭ হাজার ৪১১ হেক্টর, নওগাঁ জেলায় এক লাখ ৯৮ হাজার ৪৬২ হেক্টর, নাটোর জেলায়, ৫৬ হাজার ৩৬০ হেক্টর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় হবে ৪৬ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজ,শাহী জেলার গোদাগাড়ী,কাকন হাট,দামকুড়া তানোর,
মুণ্ডুমালা,কালিগঞ্জ,তালান্দ মান্দার চৌবাড়িয়া চাঁপাই জেলার আমনুরা ছিমলতলা কিছু অংশের ধান চাষীরা এখান থেকে বীজতলা কিনে নিয়ে তাদের জমিতে রোপন করে থাকেন। প্রতিদিন ভোর থেকে এই হাটে ক্রেতাবিক্রেতাদের সমাগম ঘটে।
রবিবার বিকালে রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা বাজারে বোরো বীজের চারার ক্রয় করতে এসেছিলেন পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক বুলবুল। সেখানেই কথা হয় তার সাথে,কৃষক বুলবুল জানান,তিনি এবার ৭ বিঘা জমিতে বোরো রোপন করবেন। জমি প্রস্তুত করে চারা কেনতে এসেছেন। প্রতি পণ চারা ৩৮০ টাকা করে কেনেছেন। তার এক বিঘা জমিতে চার পূণ চারা লাগবে।
তিনি আরো বলেন, বীজতলা করে চারা বোপন করা অনেক কষ্টের তাই বাজারের চারা উপর তিনি নির্ভরতাই বোরো চাষ করেন।
শুধু তানোরের কৃষক বুলবুল একাই নয়,বাজারের বোরো চারার উপর এমন নির্ভরতা যেন পুরো বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক হয়ে পড়েছে।
রাজশাহীর তানোর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমশের আলী বলেন,বর্তমান সময়ে জমিতে কাজ করার শ্রমিক সংকট থাকায় চাষীরা হাট থেকে তৈরি করা চারা কিনে নিয়ে তাদের জমিতে আবাদ করে থাকেন। এতে ওই চাষীর সময় অর্থ দুইটাই সাশ্রয় হয়। তাই দিনে দিনে জেলার চাষীরা তৈরি করা চারা দিকে ঝুঁকছেন বলেও মন্তব্য করেন ওই কর্মকর্তা।