বিটরুট চাষে তাক লাগানো সাফল্যে গোদাগাড়ীর ইউসুফ

প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২০; সময়: ১:৪০ অপরাহ্ণ |
বিটরুট চাষে তাক লাগানো সাফল্যে গোদাগাড়ীর ইউসুফ

এম আব্দুল বাতেন, গোদাগাড়ী : বাবা পেশায় কৃষক। তাই কৃষির প্রতি ভালোলাগা থেকে রাজশাহী অঞ্চলে প্রথম বারের মত বিটরুট চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইউসুফ আলী। রোগ বালাইকম, অল্প খরচে বেশী লাভ আর বাজারে এর চাহিদা থাকাই সফলতার মুখ দেখতে চলেছেন এই শিক্ষার্থী।

সে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের যৌবন লাইনপাড়া গ্রামের কৃষক সোলাইমান আলীর ছেলে ইউসুফ আলী (২৪)। রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের একজন শিক্ষার্থী।

বাবা একজন কৃষক তাই কৃষকের সন্তায় হয়ে কৃষি পেশার প্রতিভালোবাসা, বিটরুট অতীতে রাজশাহী অঞ্চলে চাষাবাদ না করা, পুষ্টিগুণ আর এলাকায় এটির ধারণা দিতে মূলত তিনি সবজি জাতের বিটরুট চাষ করেছেন। তিনি পরিচিত এক ভায়ের কাছ হতে ভারত হতে বীজ এনে তিনবিঘা বিটরুট চাষ করেছেন। তিনি জমিতে সপ্তাহের শুকবার ছুটি পেয়ে বাসায় ছুটে এসে জমিতে সময় দিয়ে এই চাষ কাজে লেগে পড়েন।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী বিটরুট চাষী ইউসুফ আলী বলেন, বিঘাপ্রতি ১ কেজি বীজ ৬ হাজার টাকা সার, লেবার ও পানিতে খরচ ১০ হাজার টাকা সবমিলিয়ে বিঘাতে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বেলে, দো-আঁশ জাতীয় উর্বর মাটিতে চাষ করলে সার কম লাগে এবং এই গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী।

তিনি জানান, বিটরুট ফলটি ডিসেম্বর মাসের শুরুতে রোপন করার উপয্ক্তু সময় এবং তা উঠতে প্রায় ৭৫-৮০ দিন সময় লাগে। মার্চের শেষে তা উঠিয়ে বাজারে বিক্রি করার উপযুক্ত সময়। এটি সুস্বাদু হওয়ায় খালি মুখে, ভাজি ও সুপ করে খাওয়া যায়।

তিনি আরো জানান, রাজশাহী অঞ্চলে এই ফলের চাহিদা কম ও প্রচলন তেমন না থাকায় বাজারজাত করণের জন্য কিছুটা বাঁধা মনে করছেন এই বিটরুট চাষী। এখন এই ফলের মৌসুম হওয়াই বর্তমান বাজার মূল্য ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি হলেও অন্য সময়ে ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে। তিনি তিন বিঘা জমিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। তবে জমিতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হবে তার সঠিক পরিচর্যা হলে তিনগুণ টাকা আয় করা সম্ভব তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে দেড় হতে দুই লক্ষ টাকা আয় করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

কি ভাবে বা কোন প্রক্রিয়ায় এটি খেতে হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খাবার হিসেবে বড় বড় সুপার শপ, রেষ্টুরেন্ট, চাইনিজ হোটেল গুলোতে সুপ, জুসসহ বিভিন্ন রেসিপি হিসেব বিক্রয় হয়। এছাড়াও এটির পুষ্টিগুণ অনেক, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, ভিটামিন এ এই ফলে প্রচুর পরিমানে আছে।

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল জানান, বিটরুট চাষ গোদাগাড়ীর মাটি ও আবহাওয়া জন্য উপযুক্ত এবং এটি বেশী করে চাষের জন্য এলাকার লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করছেন বলে জানান।

স্থানীয় ভাবে বাজারজাত করণের বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস হতে পরিচালিত সিসিএমসি বাজার কমিটি সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় ভাবে এবং বাইরে বিটরুটের বাজার ধরতে চেষ্টা অব্যহত আছে বলে জানান।

বিটরুট চাষের সর্বিক বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানান, বিটরুটের রোগ বালাই কম তেমন যত্ন না নিলেও ফলে। এটি পুষ্টগুণ সমৃদ্ধ ও মাটির নিচের ফল হওয়াতে, প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, ভিটামিন এ আছে, ক্যানসার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে এছাড়াও সালাত হিসেবে খেতে ভালো। এটির চাষ বাড়ানো ও বাজার ধরতে সব রকম কৃষি অফিস হতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান।

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে