রাজশাহীতে নমুনা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সন্দেহভাজনরা

প্রকাশিত: মে ১, ২০২০; সময়: ২:২৮ পূর্বাহ্ণ |
রাজশাহীতে নমুনা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সন্দেহভাজনরা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : করোনাক্রান্তের সংখ্যা অব্যাহতভাবে বাড়ছে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায়। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে বিভাগের আট জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সংগৃহীত নমুনার ফলাফলে রাজশাহী বিভাগে করোনাক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০৪ জন। এই বিপুল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। আক্রান্তদের স্বজনরা এমন অভিযোগ করছেন।

অধিকাংশ আক্রান্তকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হলেও নিয়মিত ডাক্তার-নার্স যাচ্ছেন না। টেস্টের ফলাফল দ্রুত না আসায় কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ড. চিন্ময় কান্তি দাস বলেন, টেস্টের হার বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। দ্রুত টেস্ট করে দ্রুত ফলাফলও পাওয়া জরুরি। নমুনা দিয়ে সন্দেহভাজন ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে আরও ১০ জন আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

টেস্ট বাড়ানোর জন্য রাজশাহীতে আরও একটি ল্যাব ও সম্ভব হলে জেলায় জেলায় ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে করোনা পরীক্ষা কয়েকগুণ বাড়াতে হবে। আর আক্রান্তদের শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনায় যার যেমন চিকিৎসা প্রয়োজন সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রাজশাহী বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা রুখতে হলে এ মুহূর্তে এসব পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জানা গেছে, ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত সংগৃহীত নমুনায় বিভাগের আট জেলায় করোনাক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৪ জন। এর মধ্যে সর্বাধিক ৩১ জন জয়পুরহাট জেলায়, রাজশাহীতে ১৪ জন, বগুড়ায় ১৯ জন, নওগাঁয় ১৭ জন, পাবনায় ১০ জন, নাটোরে ৯ জন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ২ জন করে করোনাক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন গত ২৫ এপ্রিলের সংগৃহীত নমুনায় বিভাগে করোনাক্রান্তের সংখ্যা ৫৩ জন ছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, রাজশাহীতে আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল আবদুস সোবহান নামের একজন মারা যায়। বাকি ১৩ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ জন সুস্থ হয়েছেন। ৬ জনকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বগুড়ায় আক্রান্ত ১৯ জনের মধ্যে ২ জন সুস্থ হয়েছেন এবং ৬ জনকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

জয়পুরহাটে আক্রান্ত ৩১ জনের মধ্যে ৪ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। বাকিদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বিভাগের পাবনায় আক্রান্ত ১০ জনকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা হচ্ছে। নাটোরের ৯ জনকেও বাড়িতে রাখা হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য জানান, রাজশাহীতে ১২ এপ্রিল প্রথম করোনাক্রান্ত শনাক্ত হয় পুঠিয়ায়। এরপর থেকে প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনাক্রান্তদের জন্য ৬ শতাধিক বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে ক্রিটিক্যাল রোগীদের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে মোট ১৭টি আইসিইউ প্রস্তুত রয়েছে।

রাজশাহীতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে ২০ বেডের আইসিইউ প্রস্তুত হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১০টি ভেন্টিলেটার তৈরি হয়েছে। পালাক্রমে ৬টি মেডিকেল টিম আইসিইউতে সেবা দেবেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেলের উপ-পরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস। প্রতিটি টিমে তিনজন ডাক্তার, ১০ জন নার্স ও চারজন স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সূত্র- যুগান্তর

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে