খালেদা জিয়াকে বিশেষ বিমানে বিদেশ যেতে দেয়ার অনুমতি দাবি

প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২০; সময়: ২:৪০ পূর্বাহ্ণ |
খালেদা জিয়াকে বিশেষ বিমানে বিদেশ যেতে দেয়ার অনুমতি দাবি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বেগম খালেদা জিয়া চাইলে বিশেষ বিমানে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। একই সঙ্গে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোরও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রাতের অন্ধকারে অনেকে বিদেশে চলে যাচ্ছেন। সরকারের নিজস্ব লোকজন। যদি ম্যাডাম চান তাহলে তার জীবন রক্ষার জন্য তার পছন্দ মতো যেকোনো দেশে যেতে দেয়ার ব্যবস্থা করা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, এ বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই। দুদক আইনজীবী বলছেন, বিদেশ যেতে হলে সরকারের পাশপাশি আদালতেরও অনুমতি নিতে হবে।

৬ মাসের কারামুক্তির প্রায় ৩ মাস শেষ হতে চললো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। করোনা পরিস্থিতির কারণে এই তিনমাস ঘরবন্দি বিএনপি নেত্রী। চিকিৎসারও সুযোগ পাননি বলে জানিয়েছে দলটি। ফলে মেয়াদ শেষ হলে কি হবে তা নিয়েই উদ্বিগ্ন বিএনপি ও তার আইনজীবীরা।

বেগম জিয়ার আইনজীবীর দাবি, বাড়ানো হোক মুক্তির মেয়াদ। নেত্রী চাইলে চিকিৎসার জন্য বিশেষ বিমানে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হোক । তবে শুরু থেকেই মুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন দুদক আইনজীবী। এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার মামলার দুদক আইনজীবী বলেন, বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার প্রশ্নই আসে না।

দুদক আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান বলেন, এটা সরকার দিতে পারে না, প্রশ্নই আসে না। যদি আদালত অনুমতি দেয় তাহলে পারবে।

আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, এ বিষয়ে তাদের কিছুই করার নেই। তবে আদালত অনুমতি দিলে আপত্তি নেই সরকারের। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই মেয়াদ বাড়ানো এবং মুক্তির শর্ত শিথিল করে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইনজীবীদের একটি সূত্র।

এদিকে, অপহরণ ও হত্যার হুমকির মামলা হওয়ার পর ‘মুমূর্ষু রোগী’ সেজে গত ২৫ মে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককে চলে যান সিকদার পরিবারের দুই পুত্র রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদার। তারা ব্যক্তিগত এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাংককের উদ্দেশে ছেড়ে যান।

সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পরই বিশেষ বিমান উড্ডয়নের অনুমতি দেন তারা। তবে এসব ফ্লাইটের যাত্রী কারা হবেন, সে বিষয় দেখভাল করে ইমিগ্রেশন বিভাগ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, থাইল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসার অনুমতি চেয়ে গত ২৩ মে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। সেই দিনই অনুমোদন দেয় থাই সরকার। তারপর ঢাকায় থাই দূতাবাসে চিঠি দিয়ে দুজনের মেডিকেল ভিসা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়। পরদিন ২৪ মে ভিসা ইস্যু হয়ে যায় এবং তার পরের দিন তারা ব্যাংকের উদ্দেশে যাত্রা করেন।

এর আগে, গুলশান থানায় গত ১৯ মে দায়ের করা ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রন হক সিকদার গত ৭ মে সকালে ন্যাশনাল ব্যাংকের এমডিসহ গুলশানে এক্সিম ব্যাংকে আসেন। তারা তাদের প্রস্তাবিত ঋণের টাকার বিপরীতে ‘কো-লেটারেল’ হিসেবে সিকদার গ্রুপের রূপগঞ্জ কাঞ্চন প্রস্তাবিত আদি নওয়াব আসকারী জুট মিলটি পরিদর্শনের জন্য নিয়ে যান এমডি হায়দার আলী ও অতিরিক্ত এমডি ফিরোজকে। ওই স্থানটি পরিদর্শন করে জায়গাটির বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে গ্রাহকের বন্ধকী মূল্যের বিশাল ব্যবধান হওয়ায় এক্সিম ব্যাংকের এমডি ও অতিরিক্ত এমডি দ্বিমত পোষণ করেন।

এর জের ধরে ‘কৌশলে’ এক্সিম ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পূর্বাচলে নিয়ে ‘হত্যার উদ্দেশে গুলিবর্ষণ’ এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সেখান থেকে বনানী ১১ নম্বরে সিকদার হাউজে নিয়ে ‘হেনস্তা করা হয়’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।

অপরদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে মধ্যে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকায় উড়োজাহাজ ভাড়া করে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। বিশেষ ফ্লাইটে মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী নাসরিন খান লন্ডনে গেছেন বলে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান মো. মফিদুর রহমান জানিয়েছেন।

মোরশেদ খানের লন্ডন যাওয়ার বিষয়ে একজন বিএনপি নেতা বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্কে তিনি দেশ ছেড়েছেন। কারণ এখানে চিকিৎসার কোনো সুব্যবস্থা নেই।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন মোরশেদ খান। মোরশেদ খান একই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের অন্যতম মালিক এবং এবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে একজন ছিলেন।

সিটিসেলের নামে এবি ব্যাংক থেকে অনিয়মের মাধ্যমে ৩৮৩ কোটি ২২ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের মামলায় গত বছর ১০ জুন মোরশেদ খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে