বাঘায় খামারির সংখ্যা বাড়লেও কমছে সাদা গরু

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২০; সময়: ৬:১১ অপরাহ্ণ |
বাঘায় খামারির সংখ্যা বাড়লেও কমছে সাদা গরু

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : প্রতিবছর কোরবানির ঈদে বাঘার চরাঞ্চলের গরু বিক্রি একটি আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়। এজন্য উপজেলার চরাঞ্চলের চকরাজাপুর ইউনিয়নের বেশ পরিচিতি আছে। প্রতিটি বাড়িতেই কমপক্ষে দু-তিনটি গরু পালন করা হয়। এসব গরু কোরবানি ঈদের জন্য বাছুর কিনে বড় করেন। পরিচর্যা করেন নারী-পুরুষ মিলে। সেই গরুগুলো রাজধানী ঢাকা বা অন্যান্য অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করেণ। কেউ কেউ ব্যাপারীদের কাছেও বিক্রি করেন।

জানা যায়, ১৯৮০-৮২ সাল থেকে চকরাজাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বিভিন্ন জাতের গরু কিনে পালন শুরু করেন। তবে সাদা বা ধবল গরু পালনকারির সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এলাকায় দেশীয় গরুর আমদানির কারণে স্থানীয় হাটে দামও কম।

বৃহসপতিবার (১৬-০৭-২০২০) সরেজমিনে চকরাজাপুর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কথা হয় সাদা গরু পালনকারিদের সঙ্গে। তারা জানান, এখন গোখাদ্যের দাম বেশি। লালন পালনের খরচও বেড়েছে। গরু পালনের জায়গা কমে গেছে। ভারতীয়, গরু বাজারে চলে আসায় সাদা গরুর প্রতি আগ্রহ কমে গেছে। তবে বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে কেউ কেউ এ জাতের গরু পালন করছেন। সামনের বছরগুলোতে এই গরু পাওয়া মুশকিল হতে পারে বলে জানান তারা।

কালিদাসখালী চরের আসলাম উদ্দিন বলেন, সাদা গরু তৈরিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়। রাজশাহীর সিটি হাট থেকে বলদ, সাদা ষাঁড় ও সাদা বাচ্চা গাভি কিনে আনেন তারা। এসব গরু করিডোরে মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে আমদানি করা। যার সারা শরীরই সাদা। যাকে তারা হরিয়ান বলদ বলেন।

আবদুল মান্নান বলেন, একেকটা গরুর জন্য প্রতিদিন খরচ হয় ৩০০-৪০০ টাকা । শুধু খইল, বুট, খেসারি, গম ও মসুর ডালের ভুসি, রাব (মিষ্টিগুড়) খেতে দেওয়া হয়। সঙ্গে ভুট্টা চূর্ণ করে দেওয়া হয়। তেমন কোনো ঘাস খাওয়ানো হয় না। তাই গরুর মাংসে আঁশ কম থাকে। মাংস একটু নরম ও তেলতেলে হয়। এ কারণে এসব গরু পালনে খরচ বেশি। তাই দামও অন্যান্য গরুর চেয়ে বেশি।

চকরাজাপুর গ্রামের সোহেল রানা বলেন, ৯ মাস আগে রাজশাহীর সিটি হাট ঘুরে সাড়ে তিন লাখ টাকায় তিনটি সাদা গরু কিনেছিলাম। খাবার ও ওষুধ মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ হয়। সেই গরুর দাম মাত্র ৪ লাখ পঁচিশ টাকা বলছেন ক্রেতারা। গত বছর গরু বিক্রি করে লাভবান হতে পারিনি।

ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, গরু পালনের বিষয়টি চকরাজাপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্য। এর মধ্যে ধবল গরুর ঐতিহ্য রক্ষায় পালনকারিদের প্রতিবছর লোকসান গুনতে হচ্ছে। সরকারিভাবে তাঁদের সহযোগিতা দেওয়া হলে ঐতিহ্যটা টিকিয়ে রাখা যেত।

উপজেলা প্রাাণিসম্পদ অফিসার ডা.আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, উপজেলায় গরু, ছাগল ও গাভীসহ খামররির সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। এর মধ্যে ধবল বা সাদা গরু পালনকারির সংখ্যা খুবই নগন্য।

  • 58
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে