নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবিতে আইডিইবির স্মারকলিপি

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২০; সময়: ১০:৩৯ অপরাহ্ণ |
নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবিতে আইডিইবির স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো, রকমের বয়সের সীমাবদ্ধতা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়ন বাস্তবায়নে এই নীতিমালা মেধাহীন শিখন হবে বলে আশঙ্কা করছেন ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ, রাজশাহী।

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা কোর্সে ভর্তির নীতিমালা ২০২০ প্রত্যাহার ও চলতি শিক্ষাবর্ষে ২০১৯ এর ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষার্থী ভর্তির দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার বিকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের এর মাধ্যমে এ স্মারকলিপি জমা দেন তারা।

স্মারকলিপি থেকে জানা গেছে, ২০২০ এর জারিকৃত নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে ক্লাসের পরিবেশ নষ্ট এবং সার্টিফিকেটের গুরুত্ব কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার জন্য আত্মঘাতি এই নতুন ভর্তি নীতিমালা-২০২০ বাতিলের দাবি জানিয়েছে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি)।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেশের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির নীতিমালায় বয়স অবারিত করা এবং গত বছরের ন্যূনতম জিপিএ ৩.৫০ এর পরিবর্তে হ্রাস করে ২.৫০ করা হয়েছে। এমন আত্মঘাতি ও হটকারী সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেয়ার প্রেক্ষিতে দেশের কারিগরি শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়াবে। দেশের শিক্ষাবিদ ও সরকার কর্তৃক কোনো স্টাডি ছাড়াই ঘোষিত হটকারী নীতিমালা বাতিল করার জন্য এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত ২০১৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী দেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২০২০ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ছাত্র ভর্তি করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সমূহে বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারির প্রায় ৬০ শতাংশ পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়া রয়েছে শেণিকক্ষ, ল্যাব, ওয়ার্কসপের মারাত্মক সংকট। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও শিক্ষক-কমচারির পদ সৃষ্টি ও নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে এমনিতেই মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে এ বিষয়ে মন্ত্রনালয়ের অধিকতর মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

স্মারকলিপি থেকে আরো জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ এর মহাসংকট নিরসনে করে জীবন-জীবিকা রক্ষায় যখন দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে কি কারণে এবং কাদের স্বার্থে এ অযোক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে পলিটেকনিক শিক্ষা ও প্রকৌশল কর্মব্যবস্থায় বিশৃঙ্খল পথ বেছে নেয়া উচিৎ হয়নি বলে মনে করেন নেতৃবৃন্দ।

প্রতিটি সিদ্ধান্ত ভারসাম্য বজায় রেখে হয়ে থাকে। এখানে নীতিমালাটি জনগুরুত্ব এবং মেধা ও কাজের মানের দিক বিবেচনা করা হয়নি। এই নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে কাজের মান থাকবে না। এছাড়াও মেধাহীন শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এতে অন্যান্য মানবিক কাজে এসব বেকারের অংশগ্রহণ ব্যাহত হবে। শিক্ষা ও কাজের খাপখাওয়ানো কঠিন হবে। ফলে ভবিষ্যতে দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ডে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে এবং শিথিলতা বিরাজ করবে। অর্থাৎ কাজের মানের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীগণ শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এমনটি নয়। পুরো দেশের উন্নয়নই বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি এই সেক্টরটি অনেকটা মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। যার বিরুপ প্রভাব পড়বে সুদুরপ্রসারি।

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন আইডিইবি’র রাজশাহী শাখার সভাপতি প্রকৌশলী মো. আমিনুল হক, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. হোসেন শাহীদ সোহরাওয়ার্দী, বাংলাদেশ প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সমিতির সভাপতি সালাহ উদ্দীন আল-ওয়াদুদ, আইডিইবি রাজশাহীর অর্থ সম্পাদক আবু বাশির, রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অহিদুল ইসলাম, আইডিইবি রাজশাহীর গ্রন্থগার ও দপ্তর সম্পাদক ময়নুল হক, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির রাজশাহী পলিটেকনিক সাখার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এসএম আজমউল্লাহ, বাংলাদেশ পলিটেকনিক শিক্ষক সমিতির রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক সাখার সাধারণ সম্পাদকপ্রকৌশলী নুরুল আফছার ভূঞা, জাতীয় বিজ্ঞান গবেষণা প্রযুক্তি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ কামাল হোসেন প্রমুখ।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে