সংস্কার হবে দুইযুগ ধরে শুধুই শান্ত্বনার বাণী

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২০; সময়: ৯:২৪ অপরাহ্ণ |
সংস্কার হবে দুইযুগ ধরে শুধুই শান্ত্বনার বাণী

আসাদুজ্জামান মিঠু : সেই তিন দশক আগে কাঁচা রাস্তাটি প্রথম পাকারণ করা হয়েছিল। তার পর থেকে আর কোন সংস্কার হয়নি। রাস্তার পিচ পাথর তো উঠেছেই, নিচের ইট বালি উঠে কাদাতে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গাই বড় বড় গর্তে সৃষ্টি হয়েছে। এ রাস্তায় প্রতিনিয়ত গর্তে পড়ে ছোট বড় যানবহন বিকল হয়ে পড়ে থাকছে সড়কের মাঝ পথে।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা-আমনুরা প্রধান সড়কের চিত্র এটি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে যাতায়েতের আর কোন বিকল্প রাস্তা না থাকায় অনেকটা বেকায়দায় পড়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করছে তানোর ও মোহনপুর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। তবে, এ সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে কয়েক যুগ ধরে কর্তৃপক্ষ আশার বানী শুনালেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন পদেক্ষপ দেয়া যাইনি।

শুধু মুণ্ডুমালা-আমনুরা সড়কেই নয়, তানোরের সাথে গোদাগাড়ী উপজেলার যোগাযোগের এক মাত্র সড়কটি অবস্থায়ও অনেকটা করুণ। মুণ্ডুমালা হতে গোদাগাড়ীর জটেবটতলা পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তাটি ১৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়াই এমন পর্যায়ে গেছে যে দেখে মনে হবে এটি পাকা সড়ক নয়, যে কাদাময় কোন গ্রামের রাস্তা। পিচ পাথর ইট বালুর কোন চিহ্ন নেই। বড় বড় গর্ততে পরিণত হয়েছে। গোদাগাড়ী হতে মুণ্ডুমালা পর্যন্ত চলছিল বাস। এ করুণ রাস্তার কারণে ৭ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে বাস চলাচলও।

তানোর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) সুত্রে মতে, ১৯৯২ সালের প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তা আমনুরার থেকে তানোর হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত প্রধান সড়ক কাচা থেকে পাকা করণ করা হয় । এর মধ্যে আমনুরার ধামধুম ব্রিজ থেকে বাগসারা পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার প্রধান সড়কটি তানোর উপজেলার মধ্যে রয়েছে।

তানোর উপজেলার ৩৩ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে মুণ্ডুমালা বাজার হতে-বাগসারা পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার সড়ক একাধিক বার সংস্কার করা হলেও মুণ্ডুমালা-থেকে আমনুরা ধামধুম পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কটি ১৯৯২ সালের পরে ২৮ বছরের একবারেও স্ংস্কার করা হয়নি। যার কারণে এ সাত কিলো সড়কের এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে রাস্তা পিচ পাথর উঠেছে তো বটে নিচ থেকে ইট বালি সরে গিয়ে খাল-ডুবাতে পরিণত হয়েছে। হয়েছে সড়কের মাঝে বিশাল বিশাল ভংস্কার গর্ত। এমন সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছেন কয়েক লাখ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, আমনুরা থেকে মুণ্ডুমালা মাত্র সাত কিলোমিটার রাস্তার জন্য পোরশা, রহনপুর, নাচোল আড্ডার উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে ৪০ কিলোমিটার ঘুরে গোদাগাড়ী হতে রাজশাহী শহরে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে খরচ ও সময় দুটোই বেশি লাগছে। আর ৪০ কিলোমিটার ঘুরে রাজশাহী যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে রোগীবহন কারী যানবহন গুলো।

আমনুরা থেকে রাজশাহী যাতায়াত করে এমন একাধিক বাস চালক জানান, মুন্ডুমালা থেকে সাত কিলোমিটার আমনুরা সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ রাস্তায় চলতে হচ্ছে হেলে দুলে। যাত্রীরা ভয়ে জড়সড় হয়ে পড়ে। অনেক সময় সড়কের মাঝ পথে চাকা পুতে পড়ে থাকে গাড়ি।

তারা আরো জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য একযুগ ধরে সড়ক কতৃপক্ষকে বাস মালিক সমিতি পক্ষে অনুরোধ করা হলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। বাস মালিক সমিতি প্রতিবছর এ রাস্তায় ভাঙ্গা চোরা ও বড় গর্তে নিজে থেকে ইটের খোয়া ফেলে। তবু ও কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি একবারের জন্য দেখ ভাল করেনি। শুধু সাধারণ যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে গাড়ী চালাচ্ছেন তারা।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি ) তানোর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, তানোর হতে আমনুরা ধামধুম ১৭ কিলোমিটার রাস্তা শুধু সংস্কারই নয়, রাস্তার দুই পাশে তিন ফিট করে সম্প্রাসরণ ও করা হবে। ইতি মধ্যে এ রাস্তার আংসিক কাজ শুরু হয়েছে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে পুরোদমে কাজ শুরু করবে ঠিকাদার।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে