রাজশাহীতে ‘আলফাতাহা’র সভাপতির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২০; সময়: ৭:৫০ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে ‘আলফাতাহা’র সভাপতির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে আলফাতাহা সমিতির সভাপতি এনামুল হক মোল্লার বিরুদ্ধে আদালতে অর্থ আত্মসাত ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেছে প্রতারণার শিকার এক গ্রাহক। সোমবার (১৭ আগস্ট) রাজশাহী সিএমএম কাশিয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে ফেরতাপাড়া গ্রামের ফজলু শেখের ছেলে আলী জামাল বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক রাজশাহী পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানান গেছে, গত বছরের ১৮ অক্টোবর কাশিয়াডাঙ্গা থানার ফেরতাপাড়া গ্রামের ফজলু শেখের ছেলে আলী জামাল এর কাছে থেকে আলফাতাহা সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি এনামুল হক ৫ লক্ষ টাকা গ্রহণ করেন। যাহা ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পের মাধ্যমে র্দীঘদিন পর লিখিত দেন এনামুল হক। এনামুল হক তিনি বছর মেয়াদে কিস্তি আকারে আলী জামালের ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধ দিবেন মর্মে আস্বীকার করলে বিপাকে পড়ে যায় আলী জামাল। বারবার আলী জামাল টাকা ফেরত চাইতে গেলে বিভিন্ন রকম টাল বাহানা ও কালক্ষেপন করে আসছে প্রতারক এনামুল হক। সম্প্রতি এনামুল হক টাকা পরিশোধ করিবে না মর্মে সাফ জানিয়ে দেয়। এতে নিরুপায় হয়ে দন্ড বিধির ৪০৬/৪২০ ধারায় আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বিচারক পিবিআই রাজশাহীকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

অনুসন্ধারে জানান গেছে, র্দীঘ তিন বছর ধরে নগরীতে ভূয়া এনজিওর নাম দিয়ে গ্রাহকের কাছে থেকে সাদা চেক নিয়ে জিম্মি করে গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা আত্মসাত করে প্রতারনা করে আসছে আলফাতাহ সমবায় সমিতির সভাপতি বাগমারা উপজেলার বালানগর মহম্মদপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেম মোল্লার ছেলে এনামুল হক মোল্লা। নেই কোন সাইন বোর্ড। নেই কোন বৈধ লাইসেন্স। কাশিয়াডাংঙ্গা থানার পিছনেই আলফাতাহ এসসিসিএস লিমিটেডের অফিস নিয়ে উধাও হয়ে গেছে। পেষায় এনামুল বালানগর মাদ্রাসার শিক্ষক হলেও রাজশাহীতে এসে মোটা অঙ্কের মুনাফা দেয়ার নাম করে প্রতারণা করে আসছে র্দীঘদিন যাবত। ভূয়া সমিতির নাম দিয়ে সুদের ব্যবসা করছে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে সাদা চেক হাতিয়ে নিয়ে।

অভিযোগ রয়েছে, কোন নিয়োগপত্র ছাড়াই দুই লক্ষ টাকা জামানত হিসাবে ও দুইটি করে সাদা ব্যাংকের চেক হাতিয়ে নিয়ে মো লিটনকে আলফাতাহ সমিতির ম্যনেজার হিসাবে ও ইমন নামের এক জনকে মাঠ কর্মী হিসাবে কাজ করাতেন। সাম্প্রতিক তারাও প্রতারণার শিকার হয়ে দিশে হারা হয়ে পড়েছেন। র্দীঘদিন কাজ করার পরেও তাদের ঠিক মতো বেতন ভাতা না দিয়ে উল্টা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলেছে সমিতির সভাপতি এনামুল হক তাদের বিরুদ্ধে।

প্রতারণার শিকার আলফাতাহা সমিতির ম্যানেজার মো. লিটন জানান, প্রথমে বুঝতে পারিনি সমিতির সভাপতি এনামুল হক আমাদের ব্যবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। সাম্প্রতিক আলী জামান নামের এক গ্রাহকের কাছে থেকে মোটা অঙ্কের মুনাফা দেয়ার নাম করে ফিকস্ট ডিপোজিট হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারণা শিকার হয়ে ওই সদস্য কাশিয়াডাঙ্গা থানায় এনামুলের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দেয়ার পরে আমাদের কে না বলেই অফিস নিয়ে পালিয়েছে।

মাঠ কর্মী ইমন বলেন, সমিতির কোন বৈধ লাইসেন্স দেখাতে পারেনি সমিতির সভাপতি এনামুল হক। আমাদের কাছে থেকে টাকা ও সাদা চেক নিয়ে আমাদের জিম্মি করে সে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে। এছাড়ও লোন দেয়ার নামে গ্রাহকের কাছে থেকে সাদাচেক ও স্টেম্প হাতিয়ে নিয়ে জিম্মি করে রেখেছে একাধিক গ্রাহককে। গ্রাহকের সঞ্চয়ের মুনাফার টাকা না দিয়ে আত্মসাত করেছে লাখ লাখ টাকা। এছাড়া জামানতের টাকাও গ্রাহকদের ফেরত না দিয়ে আত্মসাত করেছে। তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।

এ বিষয় রাজশাহী জেলা সমবায় অফিসের উপ-সহকারী নিবন্ধক তসলিমা পারভীন বলেন, বিষটি তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি মাসুদ পারভেজ জানান, এনামুলের বিরুদ্ধে লোন দেয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা অবহিত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয় সমিতির সভাপতি এনামুল হক এসব প্রতারণার বিষয় অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা। আমাকে ফাঁসাতে এমন মিথ্যা অভিযোগ দেয়া হয়েছে।

  • 235
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে