বাগমারায় শিক্ষকের গাছ কেটে জমি দখলের অভিযোগ

প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২০; সময়: ১:৪০ অপরাহ্ণ |
বাগমারায় শিক্ষকের গাছ কেটে জমি দখলের অভিযোগ

জ্যেষ্ঠ প্রতিদেক, বাগমারা : রাজশাহীর বাগমারায় ভবানীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক আবদুল গাফফারের ৫৫টি মেহগনিগাছ কেটে ফেলেছে প্রতিপক্ষরা। ২০০৬ সালে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, গাছগুলো বড় হলে বিক্রি করে টাকা দিয়ে ব্যবসা করবেন। গাছগুলো বড় হতে শুরু করেছিল ঠিকই, তবে স্বপ্ন পূরণ হলো না তার। এর আগেই গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিয়েছে প্রতিপক্ষরা। ওই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি।

থানায় অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্কুলশিক্ষক আবদুল গাফফারের বাবা ইয়াকুব আলীর কেনা ১২ শতাংশ জমিতে ২০০৬ সালে ৫৫টি মেহগনিগাছের চারা লাগানো হয়। গাছগুলো বড় হয়ে উঠছিল। লেখাপড়া শেষে আবদুল গাফফার উপজেলা সদরের ভবানীগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে পাঠদান করে আসছিলেন। পাশাপাশি প্রস্ততি নিচ্ছিলেন চাকরির জন্য। এ কারণে তিনি উপজেলা সদরেই অবস্থান করছিলেন। আবদুল গাফফার ঝিকড়া ইউনিয়নের ঝাড়গ্রামে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর লাগানো মেহগনিগাছগুলো কেটে ফেলে জায়গাটি দখল করে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫৫টি ছোট–বড় গাছ কেটে ফেলে জায়গাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা অবস্থায় দেখেন তিনি। পরে জানতে পারেন, ওই এলাকার আবদুল লতিফসহ কয়েকজন ব্যক্তি গত রোববার ভোরে গাছগুলো কেটে ফেলেন। তাঁরা বেশ কিছু গাছের ডালপালা সেখানে রেখে এবং মোটা কিছু অংশ নিয়ে চলে যান। পাশাপাশি ওই জমিতে কিছু আমের চারা লাগিয়ে এর চারপাশে বাঁশ দিয়ে ঘিরে তা দখলে নেন।

আবদুল গাফফার অভিযোগ করেন, মেহগনিবাগানটি তাঁদের বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নানার কাছ থেকে তাঁর মা ও বাবা ১৭ শতাংশ জমি কিনে নিয়েছিলেন। সেই জমিতেই গাছগুলো লাগিয়েছিলেন। এর আগেই স্থানীয় আবদুল লতিফ ওই জমির অংশীদার দাবি করে গাছগুলো কেটে ফেলে জায়গাটি দখলে নিয়েছেন। আবদুল গাফফার আরও বলেন, আবদুল লতিফ জমির অংশীদার দাবি করে গাছগুলো কেটে ফেলেছেন। অংশীদারের সপক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখালে তাঁকে গাছসহ জমি ছেড়ে দেওয়া হতো। তিনি কেন গাছগুলো ধ্বংস করলেন। এতে তাঁর স্বপ্ন ভেঙে যাওয়া ছাড়াও প্রায় তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।

আবদুল লতিফ মুঠোফোনে ২০ থেকে ২৫টি গাছ কেটে জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, তাঁরা ওই জমির কিছু অংশের অংশীদার। তবে আগে বিষয়টি জানতেন না। জানার পর তাঁদের (স্কুলশিক্ষক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের) গাছ কেটে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। তাঁরা গাছগুলো না কাটায় নিজেরাই (আবদুল লতিফ ও তাঁর লোকজন) সেগুলো কেটে নিয়েছেন। অংশীদারত্বের কাগজপত্র থাকলে তাঁরা কেন আইনের আশ্রয় না নিয়ে নিজেরাই পুরো জমির গাছ কেটে ফেললেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারাই (প্রতিপক্ষ) অবৈধভাবে জমি দখল করে ছিল। তবে বড় কয়েকটি গাছ এখনো কাটেননি বলেও জানান।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান স্কুলশিক্ষকের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত করে স্কুলশিক্ষকের গাছ কেটে জমি দখলে নেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

  • 98
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে