তানোরে মেয়র পদে লড়তে চান ছাত্রনেতা রবিন
নিজস্ব প্রতিবেদক : আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী জেলার তানোর পৌরসভায় চলছে মনোনয়ন পাওয়ার লড়াই। ক্ষমতাসীন দলে চলছে বেশি দৌড়ঝাঁপ। এই নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তানোর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল-হাসানুল কবির (রবিন সরকার)।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যোগ্য নেতার অভাবে তানোর পৌরসভা সর্বদা বিএনপির দখলে থাকে। এবার তাদের দখল থেকে পৌরসভাকে মুক্ত করে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ধারাবাহিকতা পৌর এলাকায় বিস্তার করতে মেয়র নির্বাচনের জন্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমার পরিবার আওয়ামী লীগের জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। রাজনৈতিক এবং ঐতিহ্যগতভাবে আমি আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তানোরে বিস্তার করার জন্য আমাকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দিবেন বলে আশা করছি।
আল-হাসানুল কবির বলেন, তানোর আওয়ামী লীগের দ্বায়িত্বশীল মাননীয়রা ব্যক্তিগত রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে দলীয় স্বার্থ বিরোধী হয়ে অবাঞ্ছিত লোকজনদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। যাতে করে তানোর পৌরসভার মানুষ আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বারবার বিএনপির মেয়র নির্বাচিত করেন। তানোর পৌরবাসী বহিরাগত অবাঞ্ছিত কোন নেতাকে চাইবেনা। যারা স্বার্থ হাছিল করা পর্যন্ত তানোর পৌরবাসীর পাশে থাকবে, আর স্বার্থ হাছিল হলেই দূরে ঠেলে দিবে।
সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী বলেন, তানোর পৌরবাসী শিক্ষিত, দক্ষ, নিষ্ঠাবান, পরিশ্রমী, উন্নয়ন চিন্তাশীল মেয়র চাইবে। আমি তানোর পৌর এলাকার সন্তান, তানোর পৌরবাসীর বিপদে-আপদে পাশে ছিলাম, আছি এবং আগামীতেও থাকবো ইনশা আল্লাহ। আমাকে ভালোবেসে তানোরের সর্বস্তরের নাগরিক বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে অগোছালো তানোর পৌর এলাকাকে পর্যাপ্ত উন্নয়ন করে সাজাতে চাই।
তিনি আরো বলেন, যদি জননেত্রী শেখ হাসিনার আশির্বাদ পাই তবে, বর্তমান সময়ের বাংলাদেশের যে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা, বঙ্গবন্ধুর এবং তার তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের যে উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে তারই কিছু অংশ তানোর পৌরসভাকে উপহার দিতে চাই।
তাঁর পারিবারিক বর্ণাঢ্য আওয়ামী রাজনীতির ইতিহাস রয়েছে। তাঁর পিতা ছিলেন মরহুম মহিউদ্দীন সরকার (বাবুল সরকার)। তানোর উপজেলার সফল সভাপতি মরহুম শাফিউল চেয়ারম্যানের বিশ্বস্ত সহচর। যিনি সম্পর্কে ছিলেন তাঁর মামা। মরহুম শাফিউল চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে তিনি একসময় তানোরের রাজনীতির একজন দিকপাল হয়ে উঠেন। তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সময়ে মূল সংগঠন এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন দায়ীত্ব পালন করেন। উপজেলা কৃষকলীগ এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সভাপতির দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন সাথে সাথে উপজেলা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেন। সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের বিভিন্ন সময়ে বিরোধী দলের সাথে সম্মুখ প্রতিবাদ-প্রতিরোধের সময় রাজপথে হামলার শিকার হন। ১/১১ সময় সংগঠনকে সু-সংগঠিত করে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাঁরই সন্তান মো: আল-হাসানুল কবির সরকার (রবিন সরকার)। যিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দিক্ষিত হন পিতার কাছ থেকেই। তাঁর পিতার দিক্ষা তাঁকে ছাত্রজীবন থেকেই প্রভাবিত করে এবং তা থেকেই তিনি মাধ্যমিকে পড়ালেখা করা অবস্থাতেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন।
২০০১ সালে অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থাতে তানোর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ১ম বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় তানোর আব্দুল করিম সরকার ইউনিভার্সিটি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক এবং ২০০৬ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে তানোর উপজেলা শাখা ছাত্রলীগের কাউন্সিলে সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে তানোর উপজেলা শাখার কমেটি বিলুপ্ত ঘোষণা হলে ২০১২ সালের তানোর উপজেলা ছাত্রলীগ শাখার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন।
এরপর তার দুর্বার নেতৃত্বে তানোর উপজেলায় একটি সুদৃঢ় সংগঠন গড়ে ওঠে। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর বিরোধী দলের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন প্রতিহত করতে আল-হাসানুল কবিরের (রবিন সরকার) নেতৃত্বে অগ্রণী ভূমিকা রাখে তানোর উপজেলা ছাত্রলীগ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের আগে বা পরে কোন নেতৃত্ব তানোর পৌরসভার কেন্দ্রে কোন কার্যালয় করতে সমর্থন হয়নি। কিন্তু, আল-হাসানুল কবিরের বলিষ্ঠ আপোষহীন নেতৃত্বে তানোর পৌরসভার গোল্লাপাড়া বাজারে তানোর উপজেলার তৃষ্ণাতুর নেতাকর্মীদের জন্য বহুল কাঙ্খিত সেই কার্যালয় ২০১৫ সালে তৈরী করেন তিনি। যেটি আজ তানোর উপজেলার আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের প্রধান কার্যালয় হিসেবে ব্যাবহৃত হচ্ছে। তাঁর আপোষহীন নেতৃত্ব এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তার জন্য ২০১৬ সালে তাঁর কমিটি বিলুপ্ত ঘোষনা করা হয়।