পুঠিয়া পৌরসভা নির্বাচন: তারুণ্যের হাতে উন্নয়ন ও সেবার হাতছানি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২০; সময়: ১:১০ অপরাহ্ণ |
পুঠিয়া পৌরসভা নির্বাচন: তারুণ্যের হাতে উন্নয়ন ও সেবার হাতছানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী ডিসেম্বর মাসে রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সম্ভাব্য এক ডজন মেয়র প্রার্থী। তবে বিপরীত মেরুতে থেকেও জনপ্রিয়তায় এগিয়ে রয়েছেন ক্লিন ইমেজের নবাগত তরুণ দুজন সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী।

একজন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক সৌরভ হাবিব। অপরজন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান ওরফে হাবিব খান।

সচেতন পৌরবাসীরা আশা করছেন, আশ্বাসের ফুলঝুড়ি নয়, এই তারুণ্যের হাতে দায়িত্ব অর্পিত হলে জরাজীর্ণ পৌরসভায় অত্যাধুনিক মানের উন্নয়নের ছোঁয়া আসবে।

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে বর্তমান ক্ষমতাসীন দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় এক ডজন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী দলীয় সমর্থন পেতে ও ভোটারদের খোঁজখবর নিতে মাঠে নেমেছেন।

এদের মধ্যে অনেক সম্ভাব্য প্রার্থীরা নাগরিকদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ সবুজ সংকেতের আশায় দলীয় হাইকমান্ডে ছোটাছুটি শুরু করেছেন। তবে এদের চেয়ে বিপরীত তৎপরতায় আছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাংবাদিক সৌরভ হাবিব ও বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান।

তারা নীরবে অসহায় মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়ে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছেন। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে তাদের দুজনকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। চা স্টল থেকে শুরু করে সর্বত্র তাদের ঘিরেই চলছে আলোচনা। এদের মধ্যে একেবারেই পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারি হিসেবে সুপরিচিত সাংবাদিক সৌরভ হাবিব। যদিও তিনি এখনো প্রার্থী হবার আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা দেননি, তবে এলাকার অনেকেই তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন।

এলাকাবাসী বলছেন, জনপ্রতিনিধি না হয়েও পুঠিয়াবাসীর জন্য সার্বক্ষণিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আসছেন সৌরভ হাবিব। শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, গরীব অসহায় মানুষের জন্য খাবার বিতরণ থেকে শুরু করে সকল অনুষ্ঠান-উৎসব এবং সংকটে তিনি গত কয়েক বছর ধরেই মানবসেবায় কাজ করছেন।

পৌরবাসীরা বলেন, ২০০১ সালে এই পৌরসভা গঠন করা হয়। দীর্ঘদিন আইনী জটিলতা কাটিয়ে ২০১৫ সালে প্রথম বারের মতো এখানে ভোট গ্রহণ হলে বিএনপি প্রার্থী আসাদুল হক মেয়র নির্বাচিত হন। ভোটের প্রায় দেড় বছর পর আইনী প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী রবিউল ইসলাম রবি মেয়র হন। তবে পৌরসভা গঠনের পর থেকে ১৯ বছর অতিবাহিত হলেও এলাকাবাসী নূন্যতম নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এমনকি পৌরসভার নিজস্ব কোনো ভবন বা ঠিকানাও হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্তরা শুধু রুটিন মাফিক দায়সারা কাজ করছেন। নিজেদের পকেট ভর্তিতে নানা সময় নিয়োগ বাণিজ্যে, উন্নয়নের নামে নিম্নমানের কাজ করে অর্থ লুটপাট করেছেন। যা পৌরবাসীদের মান উন্নয়নে কোনো কাজে আসেনি। তাই আগামী নির্বাচনে আধুনিক মানের নাগরিক সেবা প্রদান করতে সুশিক্ষিত ও ক্লিন ইমেজের মেয়র চান তারা।

এলাকাবাসী আরো বলেন, ভোটের সময় প্রার্থীরা জন কল্যাণের নামে লম্বা একটি তালিকার নির্বাচনী ইস্তেহার ঘোষণা করেন। ভোট শেষ তাদের ওয়াদা শেষ। এ পর্যন্ত কতটুকু উন্নয়ন হয়েছে তা পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখলে সকলের নজরে আসবে। ব্যাপক অনিয়মের কারণে বর্তমানে পৌরসভা এলাকায় রাস্তা-ঘাটের যা কাজ হচ্ছে তা অতি নিম্নমানের। ছয় মাস না যেতেই পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। নির্বাচনী ইস্তেহারে পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তেমন কোন ড্রেন নির্মাণ হয়নি।ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভর্তি। সুপেয় পানি সরবরাহের কোন উদ্যোগ নেই। এলাকায় সড়ক বাতি স্থাপন, খেলার মাঠ উন্নয়ন, বিনোদনের জন্য উদ্যান তৈরি, ওয়াইফাই সুবিধার কিছুই হয়নি। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পৌরসভার রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য গবাদিপশুর হাট স্থাপন এবং পুরনো হাট-বাজারের কোন উন্নয়ন হয়নি।

সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী সৌরভ হাবিব বলেন, জন সেবায় আত্মনিয়োগ করলেই যে জনপ্রতিনিধি হতে হবে তা আমি মনে করি না। আমি আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। নিজেও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলাম। দীর্ঘ ২১ বছর সাংবাদিকতা করার সময় অসহায় নিপীড়িত মানুষের পাশে থেকেছি। সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করেছি। আমি মনে করি শুধু দলের পদে থাকলেই হবে না, অসহায় মানুষের সেবায় কাজ করতে হবে। আমি মেয়র প্রার্থী হবো কিনা তা আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এলাকার অনেকেই আমাকে প্রার্থী হতে উৎসাহ দিচ্ছেন। অনুপ্রানীত করছেন। তারা আশা করছেন, আমি জনপ্রতিনিধি হলে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারবো- যা এতো দিন হয়নি। পৌরবাসী এবং দলীয় প্রধান চাইলেই প্রার্থী হবার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।

অপর সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, পৌরসভাটি জন্মলগ্ন থেকেই জরাজীর্ন অবস্থায় রয়েছে। এর কোনো নিজস্ব ভবন আজো গড়ে ওঠেনি। পাশাপাশি নাগরিকদের সেবার মানও অতিনিন্মমানের। দল ও জনগন চাইলে আমি নির্বাচিত হয়ে পৌরসভাকে একটি জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলবো।

এদিকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন পৌরসভার বর্তমান মেয়র রবিউল ইসলাম রবি, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বাক্কার সিদ্দিক, তার আপন ছোট ভাই ব্যবসায়ী ইব্রাহিম সরকার, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রহিম কনক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল হক মাসুদ, বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আছেন আসাদুল হক আসাদ, মামুন খান, বাবুল হোসেন প্রমুখ।

 

পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে