বাঘার পদ্মায় ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২১; সময়: ৯:৩১ অপরাহ্ণ |
বাঘার পদ্মায় ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় পদ্মা নদীর ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে বালু উত্তোলন, মজুদ ও পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। একই সাথে পদ্মা নদীর প্রবাহ বন্ধ করে বালু রাস্তা নির্মাণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করে আগামি এক দিনের মধ্যে ইজারাদারকে পাইপ তুলে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৮-০১-২০২১) বিকেলে উপজেলা নির্বাহি অফিসার শাহিন রেজা সংগীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এ আদেশ জারি করেন।

অভিযোগে জানা গেছে, পদ্মায় ইজারাবহির্ভূত এলাকা উপজেলার পাকুড়িয়ার কামালদিয়াড় মৌজা থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট শাহিন রেজা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে যান। সেখানে দেখা যায়, কামালদিয়াড় এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু সংগ্রহ করা হচ্ছে। এছাড়া নদী থেকে বালু সংগ্রহ করে নদী তীরে মজুদ করা হচ্ছে। পাকুড়িয়ার কামালদিয়াড় এলাকাটি রাজশাহী জেলা প্রশাসন থেকে ইজারা দেওয়া বালুমহাল এলাকার বাইরে। জেলা প্রশাসন শুধু উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনগর এবং কিশোরপুর পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনের জন্য বালুমহাল ইজারা দিয়েছে। এই দুটি বালুমহালের ইজারাদার প্রায় ৫ কিলোমিটার বাইরের পদ্মার কামালদিয়াড় এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু সংগ্রহ, মজুদ ও বালু পরিবহনের চেষ্টা করছেন।

স্থানীয় আশরাফুদৌলা, সাবেক ইউপি সদস্য সানিউল মালিথা, আব্দুর রাজ্জাক, মহিদুল ইসলাম, আমির আলী ও নাশির উদ্দিনসহ বাঘা পৌর কাউন্সিলর আলতাব হোসেন জানান, এলাকার কতিপয় প্রভাবশালীকে সাথে নিয়ে পাকুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেরাজ সরকার, পদ্মা নদীর ইজারাবহির্ভূত এলাকার বাইরে কৃষি জমি ক্ষতি করে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে আসছিলেন। এভাবে বালি উত্তোলনের ফলে এলাকার পরিবেশ নষ্টসহ সামনের বর্ষা মৌসুমে ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সাথে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি ও গাছপালাও নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে। যার প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকট অভিযোগ করেন তারা।

সরেজমিন দেখা যায়, নদীতে পানি কমে যাওয়ায় পদ্মায় কয়েকটি চর জেগেছে। সেই চর এলাকায় অসংখ্য ফসলের মাঠসহ আম বাগান রয়েছে। ওই চরে ড্রেজিং করে বালু মজুদ করা হচ্ছে। মজুদ করা সেই বালু সরাসরি ট্রাকে করে সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।

নির্বাহী অফিসার শাহিন রেজা বলেন, জেলা প্রশাসক ও খনিজ মন্ত্রণালয় থেকে বাঘার পদ্মায় যে স্থানে বালু উত্তোলনের নির্দেশ রয়েছে সেই স্থানটির নাম চকরাজাপুর ইউনিয়নের লক্ষীনগর ও পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কিশোরপুর। অথচ ইজারাবহির্ভূত কালিদাসখালি এলাকার কামাল দিয়াড় মৌজায় থেকে বালু উত্তোলন, মজুদ ও উত্তোলন করা হচ্ছিল। বিকালে ঘটনাস্থালে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পায়। এজন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। একই সাথে পাইপসহ ড্রেজার সরিয়ে নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযুক্ত মেরাজ সরকার বলেন, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সহ ঘর-বাড়ী নির্মাণের ক্ষেত্রে বালির প্রয়োজন আছে। ইজারাকৃত স্থানে এই মূহুর্তে ভালো বালি না পাওয়ায় এলাকার কাজের সার্থে অন্য স্থানে তুলছিলাম। বাধা এসছে এখন থেকে বন্ধ রাখবো।

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে