সাংবাদিক শিমুল হত্যার চতুর্থ বার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২১; সময়: ১:১৬ অপরাহ্ণ |
সাংবাদিক শিমুল হত্যার চতুর্থ বার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : আজ ৩ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল হত্যার চতুর্থ হত্যা দিবস। এ দিন উপলক্ষে সাংবাদিক শিমুলের পরিবার ও শাহজাদপুরে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করছে।

কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে, শাহজাদপুর প্রেসক্লাবে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাচ ধারণ, শিমুলের প্রতিকৃতিত্বে পুষ্পমাল্য অর্পন, মুখে কালো কাপড় বেঁধে প্রতিবাদ ও বিচার সম্পন্নের দাবীতে মৌন মিছিল। ২০১৭ সালে ২ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সংগ্রহকালে শিমুল গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন এবং পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার বাদী হয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সারা পৃথিবীতে সংবাদকর্মী ও মানবাধীকারকর্মীরা একযোগে এর প্রতিবাদ জানায়। হত্যার প্রতিবাদ ও দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়ে সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, সচেতন নাগরিকেরা ও নিহতের পরিবার থেকে আন্দোলন করা হয়। দাবির প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই শেষে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় নানা ষড়যন্ত্র ও আইনের মারপ্যাঁচে হত্যা মামলাটির বিচার বিলম্বিত করার অপচেষ্টা।

করোনা পরিস্থিতির পূর্বে মামলার আসামীরা মহামান্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে কিছু দাবি উস্থাপন করে মামলাটির উপর স্থাগিতাদেশ চাইলে কোর্ট তা মঞ্জুর করেন। পরে নিহতের স্ত্রী আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে আপিল করলে সেখান থেকে আপিলের শুনানি শেষে আদেশের জন্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণ বেঞ্চে পাঠানো হয়। পূর্ণ বেঞ্চে শুনানি শেষে গত ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে হাইকোর্টের ওই বেঞ্চকেই পত্র প্রাপ্তির ৬ সপ্তাহের মধ্যে রুল নিষ্পত্তি করা আদেশ দেয়া হয়।

করোনার কারণে কোট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আসামী পক্ষ ইতিমধ্যে অপ-প্রচার করতে শুরু করেছে যে, হত্যা মামলাটির বিচার আর না কি হবে না। এ সংবাদে নিহতের পরিবার ও সাংবাদিকরা শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে।

এই প্রতিবেদকের সাথে নিহত সাংবাদিক শিমুলের ৯ম শ্রেণি পড়–য়া ছেলে “সাদিক বলে, কাক্কু আমার বাবার হত্যার বিচার না কি আর হবে না?” এমন প্রশ্নের সদুত্তর দেয়া কঠিণ। কারণ, আইনের মারপ্যাঁচ দেখিয়ে এ ধরনের অনেক মামলাই বিচার বিলম্ব হয়ে ধামাচাপা করে যাওয়ার সংস্কৃতি নতুন নয়। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে এসে এই হত্যা মামলাটির দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান নিহতের পরিবার ও শাহজাদপুরে কর্মরত সকল সাংবাদিক এবং মানবাধীকার ও সাংস্কৃতিককর্মী সহ সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকারি কলেজ শাখার ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারধর করে হাত-পা ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর সমর্থকদের সঙ্গে ছাত্রলীগ প্রতিবাদীকর্মীদের সাথে সংঘর্ষকালে পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর শর্টগানের গুলিতে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হলে তাকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরদিন উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

  • 12
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে