হামলার প্রতিবাদে আবারও আন্দোলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১; সময়: ১:০৫ অপরাহ্ণ |
হামলার প্রতিবাদে আবারও আন্দোলনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : সহপাঠীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ফের আন্দোলনে নেমেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। ৩ দফা দাবিতে শনিবার সকাল ৯টা থেকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে জড়ো হয়ে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। এতে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, কুয়াকাটা, বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১০ রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এসব রুটের যাত্রীরা।

এদিকে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ দুই শ্রমিককে আটক করলেও আন্দোলনকারীরা ‘চিহ্নিত হামলাকারীদের’ গ্রেপ্তারের দাবিতে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি হচ্ছে– হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা, অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গা ছাড়া ভাব দেখিয়েছে। আমাদের মৌলিক অধিকার আদায়ে ৩ দফা দাবিতে আন্দোলন চলমান রেখেছি।

পুলিশ ২ জনকে আটকের নামে চিহ্নিত হামলাকারীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। আবার সেই অভিযোগে ঘটনার সঠিক বিবরণ না দিয়ে শুধুমাত্র জখমের কথা উল্লেখ করা হয়। শিক্ষার্থীরা ববি কর্তৃপক্ষের ‘নতজানু নীতি’ প্রত্যাখান করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।

এদিকে ববির জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদ রুমি জানিয়েছেন, নগরের রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের মেসে ঢুকে হামলার ঘটনায় শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

এদিকে দুই শ্রমিককে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রূপাতলী বাস টার্মিনালে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রূপাতলী বাস টার্মিনাল ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে নগরীর রূপাতলীস্থ বিআরটিসি কাউন্টারের স্টাফের কথা কাটাকাটি হয়। তুচ্ছ ওই ঘটনায় কাউন্টার স্টাফ রফিক ২ শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত করে। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে সড়ক অবরোধ করে এবং রফিককে গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার গভীর রাতে রূপাতলী এলাকায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেসে গিয়ে নৃশংস হামলার অভিযোগ ওঠে বাস শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে বুধবার দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে শিক্ষার্থীরা বিকেলে সড়ক অবরোধ স্থগিত করে। তবে ৪৮ ঘণ্টায়ও দাবি পূরণ না হওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। একই দাবিতে শনিবার সকাল থেকে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন তারা।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে তাদের ওপর হামলায় নেতৃত্বদানকারী তিন জনের নাম প্রকাশ করেছে। তারা হচ্ছেন- মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক এবং মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন, পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মানিক এবং তেল মামুন নামের এক শ্রমিক নেতা।

  • 13
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে