মিশন হাসপাতালের সামনে ভাগাড় নির্মাণ বন্ধের দাবি

প্রকাশিত: মে ৫, ২০২১; সময়: ৭:২৫ অপরাহ্ণ |
মিশন হাসপাতালের সামনে ভাগাড় নির্মাণ বন্ধের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর খ্রিষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের সামনে ভাগাড় নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। বুধবার হাসপাতালের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নার্সেরা। তাঁরা অন্য কোন স্থানে এই ভাগাড় স্থানান্তরের দাবি জানান।

নগরীর চণ্ডিপুর এলাকায় এই হাসপাতালের সামনে রাস্তার ধারে আগে থেকেই বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলে রাখা হতো। পরিচ্ছন্নকর্মীরা দিনভর গোটা মহল্লার ময়লা এনে এখানে জমা করতেন। রাতে সিটি করপোরেশনের গাড়িতে ময়লা তুলে নগরীর উপকণ্ঠ সিটিহাট এলাকায় ভাগাড়ে ফেলা হতো। এখন সেখানে ময়লা-আবর্জনার একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক)। গত সোমবার থেকে কাজ শুরু হয়েছে। সেদিনই এলাকাবাসী ও মিশন হাসপাতালের পক্ষ থেকে বাঁধা দেয়া হয়েছে। কিন্তু নির্মাণ কাজ চলছে।

এর প্রতিবাদে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। খ্রিষ্টিয়ান মিশন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট, গীর্জা বাড়ি ও সিটিচার্চ এরর আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন খ্রিষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ চাঁদ মণ্ডল। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- মিশনের রাজশাহী ডিনারির অঞ্চল পালক রেভারেন্ড দানিয়েল মণ্ডল, নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সলতা দ্রং, মিশন হাসপাতালের লোকাল ওয়ার্কিং কমিটির সভাপতি লরেন্স মণ্ডল প্রমুখ।

তাঁরা বলেন, প্রথম দিন কাজে বাঁধা দেয়ার পর আমরা মনে করেছিলাম তাঁরা কাজ বন্ধ করবে। তা না হলে আমাদের এটা নিশ্চিত করবে যে এই ভাগাড় স্বাস্থ্যকর। কিন্তু সিটি করপোরেশন সেটাও নিশ্চিত করেনি। তাঁরা আমাদের বোঝাতে পারেনি যে এটা অত্যাধুনিক। তাই আমরা এটির নির্মাণ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। তাঁরা আরও বলেন, বিশে^র কোন দেশে হাসপাতালের সামনে ভাগাড় হয় না। কিন্তু এখানে তিনতলা ভবনের সমান উঁচু ভাগাড় করা হচ্ছে। আমরাও এটা চাই না। আমরা সংখ্যালঘু বলে এখানে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে কিনা তা আমরা জানি না।

বক্তারা আরও বলেন, ‘এই হাসপাতাল ১০০ বছরের পুরনো। এখানেই জন্ম নিয়েছেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। দয়া করে জন্মস্থানকে ভাগাড় বানাবেন না। এটা সম্মানজনক হবে না।’ তাঁরা বলেন, ‘আমরা এখানে নার্স তৈরি করি। এই ডাস্টবিন আমাদের জন্যও সম্মানজনক নয়।’

রাসিক যে স্থানটিতে এসটিএস নির্মাণ করছে তাঁর সামনেই নার্সিং শিক্ষার্থীদের আবাসিক এলাকা। কর্তৃপক্ষ বলছে, এখানে ভাগাড়ের দুর্গন্ধে টেকা যায় না। আবাসিক কোয়ার্টারে ১০০ মেয়ে থাকে। তাঁদের ভীষণ কষ্ট হয়। পাশেই নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের কার্যালয়। তিনিও বসতে পারেন না। একটু দূরে গীর্জা। সেখানেও দুর্গন্ধ পৌঁছে যায়। তাই তাঁরা এটি বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন। এসটিএস নির্মাণ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও তাঁরা ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার মিশন হাসপাতালের পক্ষ থেকে এসটিএস নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সিটি মেয়র, স্থানীয় সংসদ সদস্য, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার এবং রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতেও কাজ বন্ধ হয়নি। ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে এই এসটিএস নির্মাণ করা হচ্ছে।

ঠিকাদার মামুনুর রশীদ বাচ্চু বলেন, ‘কাজে এই সমস্যার কথা সিটি করপোরেশনকে জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষ যদি কাজ বন্ধ করতে বলে তাহলে বন্ধ করব।’ রাসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সজিবুর রহমান বলেন, ‘জায়গাটি সিটি করপোরেশনের। সেখানে আগে থেকেই খোলা জায়গায় ময়লা ফেলা হতো। সমস্যা দূর করতেই এসটিএস নির্মাণ করা হচ্ছে। এসটিএস থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবে না। সারাদিন এখানে ময়লা মজুত করে রাতে ভাগাড়ে পাঠিয়ে দেয়া হবে।’

  • 55
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে