যে সংবাদের কারণে সাংবাদিক আফজালের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২১; সময়: ২:২১ অপরাহ্ণ |
যে সংবাদের কারণে সাংবাদিক আফজালের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : নোয়াখালী জেলা আদালতের নাজির আলমগীর হোসেন ও তার পেশকার স্ত্রীর অবিশ্বাস্য জীবনযাত্রা এবং অর্থপাচার নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় সময় টিভির সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। সময় টিভির সিনিয়র রিপোর্টার আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে গত ৬ মে নোয়াখালী যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দাবিতে মামলার আবেদন করেন আলমগীর হোসেন। তবে মামলাটি গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২০ জুন দিন ধার্য করেছেন বিচারক নিশাদু জামান।

এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আলমগীর ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের নথিপত্রের ভিত্তিতে সংবাদটি প্রকাশ করেছিলেন আফজাল হোসেন। এ বিষয়ে আফজাল হোসেন জানান, ‘গত ২২ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলা আদালতের নাজির আলমগীর হোসেনের দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করেছিলাম। প্রতিবেদনটি হয়েছিল দুদকের চার্জশিটের ওপর ভিত্তি করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি আমার নামে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছেন। মামলাটি গ্রহণ করা হবে কিনা সে বিষয়ে ২০ জুন আদেশ দেবেন আদালত।’

‘ওই দম্পতির বিরুদ্ধে বিদেশে ২৭ কোটি টাকা পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ ছাড়া দেশেই ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক আলমগীর ও নাজমুন্নাহার দম্পতি। রাজধানীর সোনারগাঁওসহ নামিদামি সব হোটেলে আলমগীরের নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে। ইতোমধ্যেই ভ্রমণ করেছেন অস্ট্রেলিয়াসহ পাঁচটি দেশ।’ এসব বিষয় ওই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছিল বলে জানান আফজাল হোসেন। আফজাল হোসেনের ‘আদালতের নাজির থাকেন সোনারগাঁওয়ে, বিদেশে পাচার ২৭ কোটি টাকা’ শিরোনামে প্রকাশিত সেই সংবাদটি পাঠকের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হলো’

“একজন তৃতীয় শ্রেণীর সরকারি কর্মচারী। কিন্তু সোনারগাঁওসহ নামিদামি সব হোটেলে তার নিয়মিত যাতায়াত। ভ্রমণ করেছেন অস্ট্রেলিয়াসহ ৫টি দেশ। নোয়াখালী জেলা আদালতের নাজির আলমগীর এবং পেশকার স্ত্রীর এমন অবিশ্বাস্য জীবনযাত্রার কথা উঠে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগপত্রে। এই দম্পতির বিরুদ্ধে বিদেশে ২৭ কোটি টাকা পাচারের প্রাথমিক প্রমাণও পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। দুদক আইনজীবী জানান, দেশেই ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক আলমগীর ও নাজমুন্নাহার দম্পতি।

কথিত আছে, আদালতের ইটও নাকি ঘুষ খায়। এবার যেন তার জলজ্যান্ত প্রমাণ মিলল। ২৩ বছর আগে নোয়াখালী আদালতের স্ট্রেনোগ্রাফার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন আলমগীর হোসেন। সে সময় পৈতৃক বাড়ি ছাড়া তার কিছুই ছিল না। কিন্তু হঠাৎ যেন আলাদিনের জাদুর চেরাগ হাতে পান আলমগীর। মাত্র কয়েক বছরে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক।

গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা এলেই আলমগীর থাকেন সোনারগাঁওসহ ৫ তারকা মানের হোটেলে। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হয়েও আনন্দ ভ্রমণে গেছেন অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ। দুদকের দেওয়া চার্জশিটে দেখা যায়, আলমগীর আর তার পেশকার স্ত্রী নাজমুন্নাহারের নামে আছে ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পত্তি। আর বিভিন্ন সময় দেশের বাইরে পাচার করেছেন প্রায় ২৭ কোটি টাকা। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, প্রতিমাসে ডিপিএস রাখেন ৫১ হাজার টাকা। চার-পাঁচটা দেশ-বিদেশ ভ্রমণ করেন। গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকা এলেই আলমগীর থাকেন সোনারগাঁওসহ ৫ তারকা মানের হোটেলে।

দুদকের জালে যখন রাঘব বোয়ালরা ধরাশায়ী তখন এ মামলার ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে দুদককে। বিচার বিভাগের দুর্নীতি বন্ধে বিচারক ও আইনজীবী উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, আইনজীবীরা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতিগ্রস্ত করতে না চান। তাহলে সেখানে দুর্নীতি হতে পারে না। সেখানকার বিচারপতিকে সব দিকে নজর দিতে হবে। শুধু এই দম্পতিই নয়, আদালত অঙ্গনে ঘাপটি মেরে থাকা এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তারা।”

  • 172
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে