পুঠিয়া হাসপাতালে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২১; সময়: ৩:১৮ অপরাহ্ণ |
পুঠিয়া হাসপাতালে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া : রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এখানে রেগীদের কাছে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয়, ডাক্তারা ইচ্ছে মত অফিস আসেন এবং ১১ জন আউট সোর্সসিং পিয়নের দাপটে রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু রোগীদের দূর্ভোগ দেখার মত কেউ নাই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা গেছে, বহির্বিভাগে দুই জন মেডিকেল অফিসার, শিশু ও অর্থোপেডিক্স এই ৪ জন। ইনডোর আরএমও এবং জরুরী বিভাগে একজন ডাক্তার উপস্থিত থেকে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন। আর বাঁকি ডাক্তাররা উপস্থিত নাই।

কয়েকজন রোগী জানান, আমরা কষ্ট করে দুর দুরান্ত থেকে এসে ডাক্তার পাই না। ডাক্তাররা তাদের ইচ্ছেমত হাসপাতালে আসেন। যেমন গাইনী ডাক্তার আজ হাসপাতালে আসেননি। তাহলে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে গর্ভবর্তী মায়েরা কোথায় গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিবে। যদি রাজশাহী শহরে যেতে হয় তাহলে আবার কষ্ট করে শহরে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হবে। তাহলে এমন দূর্ভোগ আর কত দিন পোহাবে এলাকাবাসী। আমাদের এসব ভোগান্তি দেখার মত কেউ নাই। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৮ জন ডাক্তারের পদ রয়েছে। এর মধ্যে ২২ জন ডাক্তার কর্মরত আছে। এর মধ্যে ৭ টি সাব-কেন্দ্রে ৭ জন ডাক্তার আর ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাজমা আকতার তার ইচ্ছে মত রোস্টার তৈরি করে যান। হাসপাতালে ১৫ জন মেডিকেল অফিসার কর্মরত রয়েছেন। রোস্টার মোতাবেক একজন মেডিকেল অফিসার ১৫ দিনের মধ্যে ১ দিন জরুরী বিভাগ ২৪ ঘন্টা এবং বহির্বিভাগে দুই দিন আর বাঁকি ১২ দিন সেই মেডিকেল অফিসার হাসপাতালে আসেন না। কিন্তু যে দিন আসেন সেই দিন রোস্টার খাতায় প্রতিদিনের হাজিরা স্বাক্ষর করেন বলে জানা যায়।

এদিকে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন মেডিসিন, গাইনী, শিশু, অর্থোপেডিক্স এবং এনেসথেশিয়া এই ৫ জন কনসালটেন্ট প্রতিদিন অফিস করার নিয়ম। অথচ তারা সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন হাসপাতালে এসে দায়িত্ব পালন করেন। আর বাকি দিন তারা হাসপাতালে আসেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া সরকারী নিয়ম অনুযায়ী একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে ২৪ ঘন্টা কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব পালন করার কথা থাকলেও সেই নিয়মকে অমান্য করে বর্তমান আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুর রাজ্জাক রাজশাহী শহর থেকে সকালে হাসপাতালে এসে আবার দুপুরের পর তিনি শহরে চলে যান বলে জানা যায়।

অপরদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের টিকিটের উপরে ৩ টাকা লেখা থাকলেও ২ টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হয়। এ ব্যাপারে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেখানে রোগীদের কাছ থেকে টিকিট বাবদ ৩ টাকা আদায় করা হয়। এতে এই এলাকার জনগণকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, ডাক্তারা উপস্থিত না থাকার সুবাদের আউট সোর্সসিং-এ কর্মরত পিয়নরা নিজেই ডাক্তার সেজে রোগীদের বিভিন্ন টেষ্ট করাসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রেরণ করে থাকেন। বিশেষ করে গাইনী ডাক্তার উপস্থিত না থাকলে তার আউট সোর্সসিং পিয়ন বিথী রানী গর্ভবর্তী মায়েদের সাথে এমন ব্যবহার করেন।

সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, যে টাকা আদায় করা হয় সেটা রোগীদের কল্যান ফান্ডে যায়। আর ডাক্তাররা রোষ্টার অনুযায়ী ডিউটি করেন। আর আউট সোর্সসিং দের হাসপাতালের ফান্ড থেকে বেতন দেওয়া হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে