আগস্ট এবং ২১ আগস্ট
ত্রিশ বছরেও ঘাতকদের মেটেনি
আশ, পিতাকেও হত্যা করেছে ওরা;
হত্যা করেছে স্নেহময়ী মাকে,
ভাই ও পরিবারের প্রিয় সদস্যরাও
ঘাতকদের বুলেটের শিকার; কী অদ্ভূত
রক্ত পিপাসু ঘাতক ওরা।
রাষ্ট্রভয় শাসকের বুকে, পঁচাত্তরেও
নেভানো যায়নি যে দীপ-বাঙালি
ও মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি
রাখবে না বাঙলায়-শপথ পরাজিত
ঘাতকের।
প্রতিহিংসার রাষ্ট্রযন্ত্রের শিকার পিতা ও
উত্তর বংশ পরম্পরা, রাখবে না ওরা-
দেশদ্রষ্টার শেষ চিহ্নখানি।
জনকের হত্যার মাসেই আবারো টার্গেট
গণতন্ত্রের মানস কন্যা। আবারো আগুন,
আবারো গ্রেনেড, রক্তবন্যা, লাশের মিছিল
সারি সারি।
আগস্ট মানেই বাংলাদেশের কলঙ্কিত
অধ্যায়, মানবতার পরাজয়, উল্লাস
হায়েনার।
২১ আগস্ট, বাঙালির অস্তিত্বের মূলে
আরেকটি আঘাত, গণতন্ত্রের পরাজয়,
বীভৎস এক করুণ বিকেল।
সত্য ও শত্রু দুটোই আড়াল-ঘাতকদের
চৌকস পৃষ্ঠপোষকতায়।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পিতার স্বপ্নে লালিত-
আওয়ামী লীগের সমাবেশ-দাবি গণতন্ত্রের,
পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদ; প্রদীপ্ত বক্তৃতা
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার।
রক্তচক্ষু জ্বলে উঠে শত্রুর,
ফুঁসে ওঠে ঘাতকের বুলেট।
তখন বিকেল ৫টা, যা ঘটেছিল
বায়ান্ন, একাত্তর পঁচাত্তরে;
মাত্র দেড় মিনিটে আবারো ওরা
রণাঙ্গন করে দিলো সভাস্থল, শক্তিশালী
কয়েকটি গ্রেনেড বইয়ে দিলো রক্তের বন্যা।
ভয়াবহতার কী এক নির্বাক দৃশ্য,
হতবিহবল বিশ্ব-কারো হাত নেই,
পা নেই, আইভির সারিতে
নাম জানা ও না জানা ২৩ শহীদ।
গণতন্ত্রের বহ্নিশিখার রক্ত নেবে ওরা-
কিন্তু না, নেতার প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসায়
তৈরী মানব ঢাল; শতশত ত্যাগি মানুষের
রক্তে প্রাণ এলো হাসিনার; রাখে আল্লা
মারে কে-সত্য হলো আরও একবার।
লাশের স্তুপ, আহতদের বুকফাটা আর্তনাদ
অবাক বিশ্ব, কাঁদছে বাংলাদেশ।
অবশেষে জানা গেলো শত্রুর ঘাতক গ্রেনেড
পাকিস্তানি আর্জেস।
লেখক : মাহবুব দুলাল
শিক্ষক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট।