মোবাইলে কথা বলা জরুরি হলে আমাকে অবগত করেননি কেন?

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২১; সময়: ১:৩১ অপরাহ্ণ |
মোবাইলে কথা বলা জরুরি হলে আমাকে অবগত করেননি কেন?

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় কাঠগড়ায় বসে মোবাইল ফোনে কথা বলার কারণে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে সতর্ক করেছেন আদালত।

‘কথা বলার আগে কেন তাকে (আদালত) অবগত করা হয়নি’- প্রদীপ ও তার আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন আদালত। তবে এর কোনো উত্তর দেননি তারা। উভয়ই চুপ ছিলেন। বুধবার (২৫ আগস্ট) সাক্ষ্যগ্রহণের এক পর্যায়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম আসামি প্রদীপের মোবাইল ফোনে কথা বলার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন।

তিনি আদালতকে বলেন, প্রধান আসামি প্রদীপ কুমার দাশ কাঠগড়ায় বসে দীর্ঘক্ষণ কথোপকথন করেছেন। একজন আসামি কীভাবে কাঠগড়ায় ফোনে কথা বলতে পারেন? দায়িত্বরতরা কী করছিল? কথোপকথনের ছবি এবং নিউজ বিভিন্ন মিডিয়ায় এসেছে।

এসময় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল বলেন, আদালত চলাকালীন মোবাইল ফোনে কথোপকথন কখনো আইনের মধ্যে পড়ে না। যদি জরুরি কথা বলার প্রয়োজন হতো, তাহলে বিষয়টি তিনি (প্রদীপ) তার আইনজীবীকে নিয়ে আদালতকে অবগত করেননি কেন?

একথা শুনে কোনো ধরনের কথা বা প্রতিক্রিয়া দেখায়নি প্রদীপ ও তার আইনজীবী। তারা চুপ ছিলেন, মাথা নিচু করে ছিলেন। তখন আদালত তাদের বলেন, ভবিষ্যতে এমন না করার জন্য তাকে (প্রদীপ) সতর্ক হলো। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) আলাপকালে কক্সবাজার আদালত পুলিশের পরিদর্শক চন্দন কুমার সরকার।

তিনি ওসি প্রদীপের মোবাইলে কথোপকথনের কথাটি অস্বীকার করেছিলেন। বুধবার তিনিও উপস্থিত ছিলেন আদালতে। এসময় আদালত তাকে আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেন। আদালত বলেন, আদালত চলাকালীন পুলিশি দায়িত্বের অবহেলা যাতে না হয়, সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। পুলিশের মামলায় সিনহার সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলামকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এরপর সিনহা যেখানে ছিলেন, হিমছড়ির নীলিমা রিসোর্টে ঢুকে তার ভিডিও দলের দুই সদস্য শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নুরকেও আটক করা হয়। পরে নুরকে ছেড়ে দিলেও শিপ্রা ও সিফাতকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান।

৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র‌্যাব। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।

গ্রেফতার আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। এ মামলার মোট সাক্ষী ৮৩ জন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে