রামেকে পাখি হত্যায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১; সময়: ১১:১৮ অপরাহ্ণ |
রামেকে পাখি হত্যায় ৩ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাখি হত্যা ও বণ্যপরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে আদালতে মামলা করেছে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। তিন কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি দেখিয়ে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রাজশাহীর বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়।

তবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ তত্ববধান করে থাকে গণপুর্ত বিভাগ।

মামলার বাদী জাহাঙ্গীর কবির জানান, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিদ্যমান আইনে যেটা আছে সে অনুসারেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাব্যতা যাচাই করে মঙ্গলবার এই মামলা করা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোন আদেশ দেননি।

শনিবার হাসাতাল এলাকায় ড্রেন নির্মাণের সময় দীর্ঘ দিন পাখি বাসা করে থাকা বিশাল গাছ নষ্ট করে ফেলা হয়। এই ঘটনায় ৬০-৮০ টি শামুখখোল পাখি ও পাখির ছানা মারা যায়, এছাড়া পাখির বাসা ও গাছ ধ্বংস করা হয়েছে। মামলায় পাখির হত্যায় ক্ষতি দেখানো হয়েছে এক কোটি টাকা আর পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি দেখান হয়েছে দুই কোটি টাকা।

এদিকে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. শামীম ইয়াজদানী জানান, হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ করছে পিডাবলুডি বিভাগের কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদার নিয়োগ থেকে শুরু করে কাজ তত্বাবধান তারাই করে থাকেন।

পাখি হত্যা বা পরিবেশের ক্ষতি রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কখনোই সমর্থন করে না উল্লেখ করে হাসপাতালটির পরিচালব জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কথা বলা হলেও বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কেউ তার সাথে এবিষয়ে কথা বলেননি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি এই পাখিগুলোর বিপক্ষেই থাকতো, তবে চাইলে বহু আগেই রাতের আাঁধারে পাখিগুলোকে গাছ থেকে খেদিয়ে দিতে পারতো। তবে তা করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিবেশের গুরুত্ব ও স্থানীয়দের আবেগকে সম্মান করে।

তিনি আরও জানান, ৪ সেপ্টেম্বর পাখি ও গাছ ধ্বংসের ঘটনার পর রামেক হাসপাতারের সহকারী পরিচালকে (ফিন্যান্স) প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে পিডাবলুডি বিভাগের কর্তৃপক্ষও রয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর রামেক হাসপাতারের প্রশাসন ভবনের সামনে নির্মাণাধিন একটি ড্রেনের কাজ করতে গিয়ে সেখানে থাকা একটি বিশাল গাছের শেকড় কেটে ফেলা হয়। এতে ওই গাছ হেলে পড়ে এবং গাছে বসবাস করা শতাধিক শামুকখোল পাখি ও পাখির ছানা মাটিতে পড়ে যায় ও মারা যায়।

এসময় উপস্থিত অনেকে ওই পাখিগুলো তুলে নিয়ে জবাই করে বাড়ি নিয়ে যায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরবর্তিতে স্থানীয় পরিবেশবাদী একাধিক সংগঠন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে।

এর আগে শামুকখোল পাখিগুলো রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় বিশাল গছগুলোতে বহুবছর থেকে বসবাস করে আসছিলো। তবে কারাগার এলাকায় অবকাঠামো নির্মাণের ফলে ওই গাছগুলো কেটে ফেলা হয় এবং পাখিগুলো পুরাতন আশ্রয় হারিয়ে রামেক হাসপাতালের বিশাল গাছগুলোতে নতুন করে আবাস গড়ে।

  • 75
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে