ডেঙ্গু হলে যা খেতে হবে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১; সময়: ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ |
ডেঙ্গু হলে যা খেতে হবে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : চলমান করোনা মহামারির মধ্যে দেশে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ।

জেলা শহরগুলোতে তেমন প্রকোপ না থাকলেও নাজেহাল অবস্থা রাজধানীতে। অ্যাডিস মশার কামড় থেকে ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণের ৩ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ দেখা যায়। রাজধানীসহ সারা দেশেই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু।

গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৭৯০ জন। সেই সঙ্গে মারা গেছেন আরও ২ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৬৫ জনে।

ডেঙ্গু হলে সাধারণত জ্বর, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, পেশি ও শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা হয়। সেই সঙ্গে চামড়ায় লাল লাল ফুসকুড়িও দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আর এই সময় খাবারের প্রতিও বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।

যে খাবারগুলো বেশি খাবেন :

পেঁপে পাতা : পেঁপে পাতা পাপাইন ও কাইমোপাপেনের মতো এনজাইম সমৃদ্ধ, যা হজমে সাহায্য করে এবং প্লাটিলেট বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

ডাবের পানি : ডেঙ্গু জ্বরের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ডাবের পানি পান করলে উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ডাবের পানিতে রয়েছে ইলেকট্রোলাইটসের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান।

ডালিম : ডালিম পুষ্টি ও খনিজ সমৃদ্ধ ফল। এটি শরীরের ক্লান্তিভাব কমায়। ডালিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন, যা রক্তের জন্য উপকারী। এ ছাড়াও ডালিম প্লাটিলেট কাউন্ট বজায় রাখতে সাহায্য করে।

হলুদ : ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধে হলুদ একটি উপকারী খাদ্য উপকরণ। ১ গ্লাস দুধের সঙ্গে ১ চিমটি হলুদ মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে এটি দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে।

মেথি : মেথি সহজে ঘুমাতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এটি অতিমাত্রার জ্বর কমিয়ে আনে, যা ডেঙ্গুর একটি সাধারণ লক্ষণ। তবে মেথি খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

কমলা : কমলা ও অন্যান্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফল ডেঙ্গু জ্বরে অত্যন্ত উপকারী। কমলায় ভিটামিন-সি ছাড়াও রয়েছে অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্ট, যা ডেঙ্গু প্রতিরোধে সাহায্য করে।

ব্রকোলি : ব্রকোলি ভিটামিন-কে এর একটি চমৎকার উৎস, যা প্লাটিলেট বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যদি প্লাটিলেট কাউন্ট অতিমাত্রায় কমে যায় তাহলে ডেঙ্গু রোগীর দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় অবশ্যই ব্রকোলি রাখতে হবে।

পালংশাক : পালংশাক আয়রন ও ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়াও এটি প্লাটিলেট বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

যেসব খাবারগুলো এড়িয়ে যাবেন :

তৈলাক্ত বা ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার : ডেঙ্গু জ্বর হলে তৈলাক্ত ও বেশি মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে হালকা তেল মসলায় রান্না করা খাবার খেতে হবে, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণ হতে পারে।

ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় : এ সময় শরীরে প্রচুর তরল প্রয়োজন। কিন্তু সেক্ষেত্রে অবশ্যই ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে যেতে হবে। ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় দ্রুত হৃৎস্পন্দন, ক্লান্তিভাব ও পেশির ভাঙন সৃষ্টি করে। তাই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে রিল্যাক্সিং ফ্লুইড খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণসমূহ:

১। প্রচণ্ড জ্বর

২। তীব্র মাথাব্যথা

৩। বমি

৪। শরীরে লাল র‍্যাশ ওঠা

৫। মাংসপেশিতে ব্যথা

৬। চোখের পেছনে ব্যথা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়:

১। মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা।

২। ঘর ও আশপাশের যে কোনো পাত্রে বা জায়গায় জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা যাতে অ্যাডিস
মশার লাভা বিস্তার না করতে পারে।

৩। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, বালতি, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, নারকেলের মালা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারি সেল ইত্যাদি প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা; যাতে অ্যাডিস মশা বিস্তার না করতে পারে।

৪। রাতে বা দিনে ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা।

৫। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ স্থাপন করা।

৬। মশা নিধনের ওষুধ, স্প্রে কিংবা কয়েল ব্যবহার করা।

৭। জানালাতে মশা প্রতিরোধক নেট ব্যবহার করা।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে