ছাত্রের চুলকাটা শিক্ষিকার স্থায়ী বরখাস্তের দাবীতে আন্দোলন অব্যাহত

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১; সময়: ৭:২৩ অপরাহ্ণ |
ছাত্রের চুলকাটা শিক্ষিকার স্থায়ী বরখাস্তের দাবীতে আন্দোলন অব্যাহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে ছাত্রদের চুল কাটা ও মানষিক নির্যাতনের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ১৬ তম সভায় ( বিশেষ) গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার সোহরাব আলী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন, শিক্ষার্থীদের চুল কর্তনে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অস্থিরতা নিরসন কল্পে এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।

সিন্ডিকেটের ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর আব্দুল লতিফ। সভায় সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর আবু মো. দেলোয়ার হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের যুগ্ম সচিব-৩ সৈয়দা নওয়ারা জাহান ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার সোহরাব আলী। সভায় শিক্ষক কর্তৃক শিক্ষার্থীদের চুল কাটার ঘটনায় উষ্মা ও সমবেদনা প্রকাশ করা হয়।

সিন্ডিকেট সভায় বিস্তারিত আলোচনা ও পর্যালোচনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অস্থিরতা নিরসনে ৩ টি সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। তা হলো রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক ফারাহানা ইয়াসমিনকে সাময়িক বরখাস্ত, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকান্ড অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।

তবে তদন্ত সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, সংবিধি, প্রবিধি, নীতিমালা এবং সরকারি কর্মচারী ( শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ অনুযায়ী সাময়িকভাবে বহিস্কৃত ফারহানা ইয়াসমিনের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।

সভা শেষে রাত ১১টার দিকে উপাচার্যের অনুমোদনক্রমে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তসমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্টার সোহরাব আলীর স্বাক্ষরিত উক্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আমরন অনশন স্থগিত করলেও অভিযুক্ত শিক্ষককে স্থায়ী বহিস্কার না করা পর্যন্ত বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষনা দিয়েছে।

এদিকে সাময়িক বরখাস্তের সিন্ধান্ত না মেনে তাৎক্ষনাত বিক্ষোভ মিছিল ও পরদিন শুক্রবার দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসুচি পালন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা এদিন সকাল থেকে শাহজাদপুর পৌর এলাকার কান্দাপাড়ায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে রুটিন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের তালাবদ্ধ করে মুল ফটকে অবস্থান নেয়। তখন অর্ধ শতাধীক ছাত্র-ছাত্রীকে আন্দোলনে সবর থাকতে দেখা গিয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র আবু জাফর হোসাইন সাংবাদিকদের জানান, আমরা অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছি। কিন্তু শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি। এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পৌর এলাকার কান্দাপাড়া মহল্লার রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুঁলিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করার সময় ওই বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন কেঁচি দিয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেন। এ ঘটনার পর থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সকল পরীক্ষা বর্জন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের মুল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে লাগাতার বিক্ষোভ-সমাবেশ করে আসছে।।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে