সুজানগরে আ.লীগ নেতা আবুল কাশেমের স্মরণ সভা

প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১; সময়: ৭:৩৫ অপরাহ্ণ |
সুজানগরে আ.লীগ নেতা আবুল কাশেমের স্মরণ সভা

এম এ আলিম রিপন, সুজানগর : বরেণ্য রাজনীতিবিদ সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রয়াত আবুল কাশেম রাজনীতিক হিসেবে এই উপজেলায় নিজের সাংগঠনিক দক্ষতায় দলকে সামনের কাতার থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আ.লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি মোহাম্মদ রেজাউল রহিম লাল।

শুক্রবার (১লা অক্টোবর) উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে প্রয়াত আবুল কাশেমের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় অডিটোরিয়াম কাম কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় আলোচকের বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে আবুল কাশেম আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে লড়াই করে গেছেন।

তিনি ছিলেন দলের পরীক্ষিত ও ত্যাগী নেতা। এই ত্যাগী নেতা উপজেলার সকল স্তরের দলীয় নেতাকর্মীদের শ্রদ্ধা ও সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেলেন। তাই তার কীর্তি ও স্মৃতি সকলের মাঝে চিরঞ্জীব হয়ে থাকবে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং দীর্ঘ দিনের পরীক্ষিত আদর্শ রাজনীতিক মরহুম আবুল কাশেম এর কনিষ্ঠ পুত্র সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে পাবনা-৫ আসনের এমপি ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, আবুল কাশেম-এর আদর্শ ও ত্যাগকে বুকে ধারণ করে সকলকে দলের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যেতে হবে।

তিনি যে ভাবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার প্রাণের ও ভালবাসার সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসাবে কাজ করে গেছেন তার এই অবদান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পাবনা জেলা ও সুজানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শ্রদ্ধার সাথে যুগ যুগ ধরে মনে রাখবে। জীবিত থাকাকালীন মরহুম আবুল কাশেমের নেতৃত্বে এই উপজেলা আওয়ামীলীগ যেভাবে সুসংগঠিতভাবে কাজ করেছে আগামীতেও যেন এই ধারা অব্যাহত থাকে এর জন্য উপস্থিত নেতাকর্মীদেরকে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও আহবান জানান তিনি।

স্মরণ সভায় অন্যদের মাঝে সুজানগর পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনির উদ্দিন আহম্মেদ মান্না, আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ দপ্তর সম্পাদক দেলায়ার হোসেন শাহজাদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সামছুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, উপজেলা আ.লীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদের রোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক রবিউল হক টুটুল, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস ছাত্তার, পৌর আ.লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার রাজু আহম্মেদ ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম তমাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সভায় সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ,সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ সহ উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন । পরে মরহুম আবুল কাশেমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।

দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন সুজানগর হাসপাতাল মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. সিদ্দিকুর রহমান। দোয়া মাহফিলে উপরোক্ত ব্যক্তিবর্গ ছাড়াও সুজানগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী, উপজেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজা হাসান, উপ-দপ্তর সম্পাদক রেজা মন্ডল, সদস্য মাহমুদ্দুজ্জামান মানিক , সুজানগর মোহাম্মাদিয়া দাখিল মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি একিউএম শামছুজ্জোহা বুলবুল, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম (বাবু খান), সুজানগর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম এ আলিম রিপন, পৌর যুবলীগের সভাপতি জুয়েল রানা সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ শরীক হন।

এর আগে স্থানীয় সুজানগর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন সহ দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। উল্লেখ্য সফল রাজনীতিক মরহুম আবুল কাশেম ২০১৬ সালের এ দিনে পৌরসভার চরসুজানগর গ্রামে তার নিজ বাসভবনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন।

তিনি জিবীত থাকাকালীন ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর পর তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সক্রিয়ভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার কিছু দিনের মধ্যে সাংগঠনিক যোগ্যতার কারণে প্রথমে উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রাপ্ত হন। এর পর ১৯৭৪ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৪ সাল থেকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে তিনি দুইবার সুজানগর ইউপি চেয়ারম্যান এবং ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি দীর্ঘদিন সুজানগর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে