ভয়ানক নারীপাচার চক্রের আস্তানা থেকে যেভাবে পালিয়ে এলো মেয়েটি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০২১; সময়: ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ |
ভয়ানক নারীপাচার চক্রের আস্তানা থেকে যেভাবে পালিয়ে এলো মেয়েটি

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : ইরাক থেকে ডাক্তার পরিচয় দেয়া প্রতারক লিটন ফোনে কথা বলেন ভুক্তভোগী ওই নারীর সাথে। একপর্যায়ে ফোনালাপ রূপ নেয় প্রণয়ে, তারপর পরিণয়। লিটনের দেয়া উচ্চ বেতনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেননি সাহানা। ডয়চে ভেলের ছবি।

বিয়ে করে নিজের স্ত্রীকেই আবার বিদেশে পাচার করে দিতেন কথিত ডাক্তার লিটন। নানা রকম প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশে নেওয়ার পরই বেরিয়ে আসতো তার আসল চেহারা। লিটনের খপ্পরে পড়ে ইরাকে পাচার হওয়া তারই এক স্ত্রীর গল্প থাকছে এই প্রতিবেদনে।

ধরা যাক, বাগদাদফেরত সেই নারীর নাম সাহানা। উচ্চাকাঙ্ক্ষা যেখানে শেষ, শান্তির শুরু সেখানেই; পাচারের শিকার সাহানা এখন তা বুঝতে পারছেন। নানা চড়াই উৎরাই পার হয়ে এখন অনেকটা সুখেই কাটছে তার দিন। সাবলীল ভঙ্গিতে ইরাকে পাচার হওয়ার গল্প শোনালেও চোখের কোণার জলটুকু লুকোতে পারেননি।

মেডিকেল সহকারি হিসেবে পড়াশোনা করে স্বপ্ন দেখেছিলেন ক্যারিয়ার গড়বেন বিদেশে। আর তাই নানা মাধ্যমে বিভিন্ন জনের সাথে যোগাযোগ করেন তিনি। শেষমেশ এক এজেন্সি থেকে তাকে প্রস্তাব দেয়া হয় ইরাকে পাড়ি জমানোর। উচ্চ বেতনের আশায় সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেননি সাহানা।

সাহানার জীবনে ট্র্যাজিক গল্পের শুরু এখানেই। ইরাক থেকে ডাক্তার পরিচয় দেয়া প্রতারক লিটন সরাসরি ফোনে কথা বলেন বাংলাদেশে থাকা সাহানার সঙ্গে। ধীরে ধীরে সে ফোনালাপ রূপ নেয় প্রণয়ে, তারপর পরিণয়।

এক পর্যায়ে বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণ ভিসায় কৌশলে সাহানাকে নেয়া হয় দুবাই এবং এরপর সেখান থেকে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে। সেখানে পৌঁছেই বুঝতে পারেন লিটনের প্রতারণার জালে জড়িয়েছেন তিনি। আর সব বুঝে ফেলায় তার ওপর নেমে আসে নির্যাতন। চোখের কোণায় জল নিয়ে যমুনা নিউজকে সেই ভয়াবহ দিনের কথা শোনালেন সাহানা।

শেষপর্যন্ত অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে লিটনের ডেরা থেকে পালিয়ে ইরাকের একটি হাসপাতালে চাকরি নেন সাহানা। তবে সে কাজে আর মন বসেনি তার। বুক ভরে শ্বাস নেবার আশায় ফিরে আসেন দেশে। দেশে ফিরেই আইনের আশ্রয় নেন তিনি। তার অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় কথিত ডাক্তার লিটন ও তার সহযোগীদের।

যদিও মানবপাচারের বিশাল এই চক্রের অনেকেই এখনও পলাতক। তবে তাদের ধরতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানালেন র‍্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার মোজাম্মেল হক। সাহানার প্রত্যাশা, পাচারের সঙ্গে জড়িত সবাইকে আইনের মুখোমুখি করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে