রাজশাহী হাসপাতালের নারী চিকিৎসক যৌন হয়রানির শিকার

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২১; সময়: ৩:১৯ পূর্বাহ্ণ |
রাজশাহী হাসপাতালের নারী চিকিৎসক যৌন হয়রানির শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসক যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ওই কর্মকর্তাকে বদলি করেন। একইসঙ্গে যৌন হয়রানির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ডা. খুরশীদ আলম।

অভিযুক্ত ওই স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্মকর্তার নাম ডা. রাফিউল হাসান। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ছিলেন। যৌন হয়রানির অভিযোগের পর তাকে বরগুণায় বদলি করা হয়েছে। আর ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক এখনও রামেক হাসপাতালে কর্মরত।

তিনি জানান, সম্প্রতি কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে তাকে ২৯ আগস্ট শুনানির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ডাকা হয়। এ অবস্থায় কী করা যায় সেই পরামর্শ করার জন্য তিনি ডা. রাফিউল হাসানের খোঁজ পান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাকে ২৪ আগস্ট অফিসে দেখা করতে বলেন।

সেদিন বিকালে তিনি দেখা করতে গেলে ডা. রাফিউল হাসান তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান। নিজেকে অধিদপ্তরের প্রভাবশালী কর্মকর্তা উল্লেখ করে ওই নারীকে বলেন, তার এই বিপদ থেকে শুধু তিনিই তাকে উদ্ধার করতে পারেন।

সেদিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে ওই নারী চিকিৎসককে ভয় দেখান ডা. রাফিউল। সান্তনা দেওয়ার নামে তিনি ওই নারীর পিঠে ও ঘাড়ে হাত দেন। শেষে কোনরকম পরামর্শ দেওয়া ছাড়াই পরদিন সকাল ৯টায় আবার দেখা করতে বলেন। কিন্তু তার পৌঁছাতে আধাঘণ্টা দেরি হয়। এ কারণে তিনি কথা না বলে আবার বিকাল ৪টায় আসতে বলেন।

কথা অনুযায়ী, সময়মতোই হাজির হন ওই নারী চিকিৎসক। কিন্তু তখনও তাকে এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। এরপর বিকাল ৫টা বাজলে অফিসের সবাই চলে যেতে থাকেন। তখন ডা. রাফিউল ওই নারী চিকিৎসককে তার পাশের চেয়ারে বসতে বলেন।

এতে তিনি রাজি না হলে ডা. রাফিউলই উঠে এসে পেছন থেকে ওই নারীকে জড়িয়ে ধরেন। শুধু তাই নয়, ওই নারীর স্পর্শকাতর অংশে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই নারী চিৎকার দেওয়ার কথা জানালে ডা. রাফিউল বলেন, বিনিময়ে কিছু না দিলে তাকে কেন তিনি সাহায্য করবেন। তখন জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে ওই কর্মকর্তার কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন ভুক্তভোগী।

তিনি বলেন, ডা. রাফিউলের অফিস কক্ষটি এমনভাবে সাজানো যে, দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে তার ডেস্কের কাছে কী হচ্ছে তা কেউ দেখতে পারবে না। সে কারণে তিনি সুযোগটা নিয়েছিলেন। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তিনি তার যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে ডা. রাফিউল হাসান বলেন, এসব বিষয় নিয়ে এখন তিনি কথা বলতে চান না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত মেডিকেল অফিসারকে বরগুণা জেলার একটি মফস্বল এলাকায় বদলি করা হয়েছে। তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্তও করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং তাদের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে