চিরশিশু এক
সংগ্রাম-ঐতিহ্যের একটি পরিবার,
নির্ভয় আশ্রয় বঙ্গবন্ধুর ৩২ নং বাড়ি-
এই বাড়িতেই সৃষ্টি ইতিহাস;
সেখানেই ১৯৬৪’র ১৮ আক্টোবর
জন্ম এক শিশুর।
ফুটফুটে চাঁদ খেলিছে ধরায়-
বড় ভাইবোন সবারই আদর
লভিছে আনন্দ, বাড়ছে কদর।
লাল-নীল-সাদা বঝে না অবুঝ
আহ্! কী সুখ সুখ, নেই কোন দুখ-
ফড়িং’র সাথে ছুটে চলা এক রাজপুত।
বাড়ির উঠানে ফুল-পাখি গাছ পালা
শিশুর সঙ্গী। আবার সাইকেলে চড়ে
এপার-ওপার করা। যেন কোটি শিশুর
প্রতীক-দু’চোখে তার খেলা করে স্বপ্নেরা।
বাড়ির লাইব্রেরি। সেখান থেকে বই নিয়ে
বড় বোনেরা গল্প শুনাতো, শিশুর আবদারে-
বাবার কাছেও শুনতো গল্প। এক নিপীড়িত
জাতির, দেশের ইতিহাস, সংগ্রাম
স্বাধীনতা ও বিজয়ের। হঠাৎ চকিতে
চশমা কেড়ে পরতো নিজের চোখে-
শিশু স্বাভাবেই ছোট হাত দিয়ে চিবুক
টেনে দেখাতো নিজের স্বরুপ।
বয়সের প্রায় সময়ই বাবা থাকেন
কারাগারে। পিতার কাছে থেকে
আসতেই চায় না। তবুও আসে-
বাড়ি ফেরে। পিতার আড়ালে মায়ের
আঁচলই শিশুর নির্ভয় আশ্রয়-
ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বাস্তবের পিতাকে দেখা।
সোনালী শৈশব পেরুতে পারেনি শিশু
সেই শিশুই এখন আর্তমানবতার যিশু।
আজও বড় হয়নি সে শিশু, কখনোই
হবে না বড়, বাংলার প্রতিটি শিশুর
জীবন্ত প্রতীক।
সে আর কেউ নয়, বাঙালির মুক্তি
ও অধিকার পেতে জীবন কেটেছে
কারাগারে যার। বাঙালির শেষ
ভরসা, সেই অবিসংবাদিত নেতা-
বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ সন্তান।
৭৫’র আগষ্টে পথহারা দেশীয় পাপিষ্ঠরা,
প্রলোভনে চৌকির নিচ থেকে বের করে
খুদিল শিশুর বুক, রক্তের ফিনকি
ছুটে দিক-বিদিক। নিষ্পাপ শিশু শহীদের
দরজা খোলা। বুকে নিয়ে শেল;
বাংলার শিশুর প্রতিচ্ছবি, শেখ রাসেল।
লেখক-মাহবুব দুলাল
কবি, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট
কবিতাটি, কবির ‘তুমি অবিনাশী’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেয়া।