রাবির হলে দুই ছাত্রকে নামিয়ে সিট দখল

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২১; সময়: ৩:০২ অপরাহ্ণ |
রাবির হলে দুই ছাত্রকে নামিয়ে সিট দখল

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের দুই আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি ছাত্র সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে। ওই দুই শিক্ষার্থীকে আবাসিক হলে তুলে দিয়েছিলেন ওই হলের এক আবাসিক শিক্ষক।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, তার আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তিনি ২০১৮ সালের নভেম্বরে হলের আবাসিকতা পেয়ে হলে উঠেছিলেন। কিন্তু সে সময়েও তাকে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এবার করোনার পর হল খোলার দিন সকালে তাকে আবাসিক শিক্ষক তানজিল ভূঞা ৪৭৫ নম্বর কক্ষে তুলে দেন। সেদিন ওই হলের কিছু রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এসে তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, এখানে থাকা যাবে না। তাদের ছেলেপেলে আছে। বিষয়টি স্যারকে জানালে তিনি অভয় দিয়ে থাকতে বলেন।

পরের দিন ওই ছাত্র কোনো একটি কাজে বাইরে গিয়েছিলেন। পরে হলে ফিরে এসে দেখেন তার সবকিছু রুম থেকে বের করে দিয়ে নতুন একটি তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে সেখানে তাদের কয়েকজনের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর ওই কক্ষ থেকে তিনি চলে আসেন।

একই ঘটনার শিকার আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, তার পারিবারিক অবস্থা ভালো নয়। তাই বাইরে থাকাটা কষ্টকর ছিল। বিষয়টি আবাসিক শিক্ষক তানজিল ভূঞাকে বললে তিনি আবেদন করতে বলেন। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি হলে ওঠার অনুমতি পান এবং ওই শিক্ষকই তাকে ১৫৬ নম্বর কক্ষে তুলে দেন। কিন্তু এরপর তিনি এক দিনও ওই কক্ষে থাকতে পারেননি। তার বেডিংপত্রসহ জিনিসপত্র দুই দফা বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। পরে অন্য আরেকটি কক্ষে তিনি থাকছেন।

এ ব্যাপারে আবাসিক শিক্ষক তানজিল ভূঞা বলেন, সোহরাওয়ার্দী হলে গত দুই বছরে ১০০টির বেশি সিট খালি হয়েছে। কিন্তু হল কর্তৃপক্ষের কাছে নেই সিটগুলো। বেশির ভাগই দখলে নিয়েছে একটি ছাত্র সংগঠনের নেতারা। এ কারণে হলের আবাসিকতা পেয়েও হলে উঠতে পারছেন না সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

তানজিল ভূঞা আরও বলেন, হলের আবাসিকতা ছিল দুজন শিক্ষার্থীর। একজন করোনার আগে আবাসিকতা নিয়েছেন। অন্যজনেরও হলের আবাসিকতা আছে। তাদের দুজনকে তিনি সিট ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে ১৫৬ ও ৪৭৫ নম্বর কক্ষে তুলে দেন।

তুলে দেওয়ার সময় ওই হলের ছাত্রলীগ নেতা মাজহারুল ইসলাম তাকে জানান, এই সিটগুলোতে তাঁর ছেলেরা উঠবে। তাই তিনি তাদের উঠতে না করেন। কিন্তু তবুও তিনি ওই দুই শিক্ষার্থীকে হলে তুলে দেন। পরে তাদের সবকিছু বাইরে ফেলে দেয়া হয়। তিনি পরে ওই দুই শিক্ষার্থীকে অন্য দুটি কক্ষে তুলে দিয়েছেন। এই বিষয়গুলো তিনি হলের ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষকে জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, যে কক্ষগুলোতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা থাকতেন, এখন লেখাপড়া শেষ করে তারা চলে গেছেন। সেই কক্ষগুলোতে তারা ছাত্রলীগের কর্মীদের তুলছেন। ওই দুই শিক্ষার্থীকে তারা ওই নির্দিষ্ট কক্ষ ছেড়ে দিতে বলেছেন। তাদের বেডিংপত্র ফেলে দেওয়া হয়নি। তাদের পরে অন্য কক্ষে তুলে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সবাইকে বলা আছে, কোনো আবাসিক শিক্ষার্থীকে যেন হল থেকে বের করা না হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে