রাজশাহীতে হিজড়াদের ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণে আলোচনা সভা

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২১; সময়: ৭:০৭ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে হিজড়াদের ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণে আলোচনা সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা বাঁচার আশা সংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে মঙ্গলবার হিজড়া জনগোষ্ঠির ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় হিজড়া জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অধিকার সংরক্ষণ উদ্ভাবনী প্রকল্পের আওতায় সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ বিশেষ করে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী নিজ ধর্ম পালনে বাধা দূরীকরণ, সংরক্ষণ ও ধর্মীয় শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখা বিষয়ে নগরীর নিউমার্কেট এলাকার একটি চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বাঁচার আশা সংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি মোস্তফা সরকারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আরএমপি বোয়ালিয়া বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার মীর মুহসীন মাসুদ রানা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবু তাহের, ভালাম জামে মসজিদের পেশ ইমাম গোলাম মোস্তফা, টিকাপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম আনোয়ার হোসেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান পরিষদ রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ও দিনের আলো হিজড়া সংঘের উপদেষ্টা শ্যামল কুৃমার ঘোষ, রাজশাহী ব্লাস্ট এর সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট সামিয়া বেগম শিরিন, রাসিক জোন-২ সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর আয়েশা খাতুন, দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা। সভা সঞ্চালনা করেন দিনের আলো হিজড়া সংঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জয়িতা পলি। এছাড়াও মুসলিম, হিন্দু ও খ্রীষ্টান ধর্মের হিজড়া জনগণ এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত অতিথিগণ বলেন, হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষ এই সমাজেরই একজন। সৃষ্টিকর্তা সব পারেন। তবে সৃষ্টির এই সেরাজীবকে কখনো অবহেলা করা যাবেনা। ইসলাম কখনো কাউকে অবহেলা ও ধর্মপালনে বাধা সৃষ্টি করেনা। তবে বিশেষ কারনে মসজিদে বসার ভিন্নতা রয়েছে। যেমন একই কাতারে নারী পুরুষ একাসাথে নামাজ আদায় করা যাবে না। এতে সমস্যা হবে। উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিত বলেন, কোন ধর্মেই সংঘাত, হিংসা বিদ্বেস বরদাস্ত করেনা। আবার ধর্ম পালনে বাধা প্রদান করেনা। তবে নারীরা নারীদের স্থানে এবং পুরুষরা পুরুষদের স্থানে নামাজসহ অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করবে বলে অতিথিরা উল্লেখ করেন।

অতিথিবৃন্দ আরো বলেন, সরকার হিজড়া জনগোষ্ঠিকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের অধিকার সংরক্ষণে ব্যবস্থা নিয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠিকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য শিক্ষা ও বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও ছোট ছোট ব্যবসা করার জন্য ঋণ সুবিধা প্রদানসহ কর্মের ব্যবস্থা করছেন বলে জানান তারা। এই জনগোষ্ঠিকে নিয়ে আর কোন বিভ্রান্তি নয়, তাদের সমাজের একজন হিসেবে গ্রহন করতে হবে। সেইসাথে তাদের প্রতি সহনশীল এবং সচেতন হতে হবে। এছাড়াও অভিভাবকদের সচেতন হয়ে অন্যের কথায় কান না দিয়ে নিজের এই ধরনের সন্তানকে আর পাঁচটি সন্তানের ন্যায় মানুষ করে গড়ে তোলার আহবান জানান তারা।

 

 

 

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে