দুর্গাপুরে চাচার বিরুদ্ধে প্রাণনাশ ও আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ ভাতিজার

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২১; সময়: ৪:৫০ অপরাহ্ণ |
দুর্গাপুরে চাচার বিরুদ্ধে প্রাণনাশ ও আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ ভাতিজার
নিজস্ব প্রতিবেদক, দুর্গাপুর : রাজশাহীর দুর্গাপুরে আপন চাচার বিরুদ্ধে প্রাণনাশ ও আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ এনেছেন আইয়ুব আলী নামের এক যুবক। আইয়ুব আলীর বাড়ি উপজেলার আড়ইল গ্রামে। সে ওই গ্রামের ইসমাঈল হোসেনের পুত্র। আপন চাচা আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে রাজশাহীর পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে নিজের জীবনের নিরাপত্তা ও আইনী প্রতিকার চেয়ে গত বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ করেছেন আইয়ুব আলী।
লিখিত অভিযোগে আইয়ুব আলী বলেন, নাটোর এন.এস সরকারী কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করি এবং চাকুরীর সন্ধান করতে থাকি। তখন আমার আপন চাচা আবুল কালাম আজাদ আমাকে আস্বস্ত করেন যে, তাকে ১০ লাখ টাকা দিলে আমাকে তাহেরপুর কলেজে শূণ্য পদে চাকুরী নিয়ে দিবে। পরবর্তীতে উজালখলসী গ্রামের মজিদ মাস্টারের মাধ্যমে আমার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নেন আমার চাচা। এরপর আমাকে শূন্য পদের বিপরীতে সৃষ্ঠ পদে নিয়োগ দেয়। যার কারনে এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতা থেকে আমি বঞ্চিত রয়েছি। ফলে আমি শিক্ষকতার পাশাপাশি গ্রামের অনাবাদী পতিত জমি লীজ নিয়ে চাষাবাদ করে জীবন যাপন করতে থাকি। কিছুদিন পর আমার চাচাতো ভাই কামরুজ্জামান (রাব্বি) গ্রামে এসে আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, তুই যে পুকুরে মাছ চাষ করছিস সেই পুকুর আমার পিতাকে ছেড়েদে। আমি ছেড়ে দিতে অস্বীকার করলে বলে তুই জানিস না, আমার পিতা আওয়ামী লীগের বড় নেতা। যা খুশি তাই করতে পারে।
এর কিছু দিন পরে আমার চাচা আমাকে জানায় আমাদের যৌথ চাষাবাদকৃত লীজকৃত পুকুরের চেকবহি তার দরকার। আমি সরল বিশ্বাসে তাকে আমার চেকবহির ৩টি পাতা স্বাক্ষর করে সমস্ত ফাঁকা চেকবহি তাকে দিয়ে দেই। পরে জানতে পারি জাহাঙ্গীর আলম নামের এক ব্যাক্তি আমার বিরুদ্ধে এনআইএ্যাক্ট এর ১৩৮ ধারায় ৩ লাখ টাকার মামলা করে। চাচার কাছে আমি এর কারণ জানতে চাইলে চাচা জানায়, ওই চেক ১ সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারাকে তার এপিএস বদির মাধ্যমে প্রদান করেছেন। তার কিছুদিন পরেই আমাকে অংশীদার ভিত্তিক বিলের মাছ চাষ থেকে বিতাড়িত করে এবং আমি সহ আরো ৩ জনের জামানতের ৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন।
আমি চাচাকে সকল বিষয় জানতে চাইলে আমাকে বলে, তুই আমার চেহারা যেহেতু চিনে গেছিস সুতরাং তুই আর পুকুরে যাবিনা। আমি হুকুম দিলে তোর অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় আমার চাচা আমাকে হুমকি ধামকি দিতে থাকে।
এছাড়া গত ৬ মাস আগে রাম দা নিয়ে আমার বাড়িতে হামলা চালায় এবং আমাকে হত্যার চেষ্টা করে। আমি বাবা-মা এবং গ্রামের মানুষের সহায়তায় কোনরকম বেঁচে যাই। কিন্তু চাচা এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা হুমকি ধামকি দিতে থাকে।
অভিযোগে আরও জানা যায়, জীবন বাঁচানোর স্বার্থে ঢাকায় পিকাপ ভ্যান ও মোটরসাইকেল চালিয়ে কোনমতে জীবন নিয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করেন আইয়ুব আলী। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গ্রামে ফিরে আসবেন। কিন্তু চাচা আবুল কালাম আজাদ এবং চাচাতো ভাই কামরুজ্জামান (রাব্বী) গ্রামে না পেয়ে আইয়ুব আলীর বাবা-মাকে প্রাণে মারার হুমকি দিতে থাকে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবন ধারনের সকল ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে থাকে। বাধ্য হয়ে আইয়ুব আলী  পরিবারের কথা চিন্তা করে গ্রামে এসে জীবনের নিরাপত্তা ও প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতে খায়ের আলম বলেন, ও ধরনের লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত চাচা আবুল কালাম আজাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুরো অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে