পরীক্ষা নিয়ে ধন্দে প্রাথমিকের শিশুরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২১; সময়: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ |
পরীক্ষা নিয়ে ধন্দে প্রাথমিকের শিশুরা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : এবার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির মূল্যায়ন পদ্ধতিটা কেমন হবে, তা এখনো বের করতে পারেননি দায়িত্বশীলরা।

ফলে বার্ষিক পরীক্ষা হবে কিনা, পরীক্ষা হলে কীভাবে নেওয়া হবে, আর না হলে মূল্যায়ন পদ্ধতি কেমন হবে- তা নিয়ে একরকম ধন্দে পড়ে গেছেন দেশের প্রাথমিকস্তরের ২ কোটি ১৯ লাখ শিক্ষার্থী।

বেশ আগেই মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকস্তরের দায়িত্বশীলদের কবে ঘুম ভাঙবে- এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

তারা বলছেন, বছরের শেষ দিকে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে একসঙ্গে সব শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া এবং এর ফল প্রকাশ একটি বড় কর্মযজ্ঞ। একাধিক শিফটের স্কুলগুলোয় পরীক্ষা আয়োজনের ক্ষেত্রে আগে থেকেই রুটিন তৈরি করতে হয়। আবার ডিসেম্বর মাসেই জানুয়ারির ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে হয় স্কুলগুলোকে।

এসব ক্ষেত্রে তাড়াহুড়া করে কোনো কাজ করা যায় না। এর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জড়িত। চলতি শিক্ষাবর্ষের বাকি আছে মাত্র ৪৪ দিন। পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা আমাদের সময়কে জানান, গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ বছরের বার্ষিক পরীক্ষার আয়োজনসংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়।

তবে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে অংশ নেওয়া মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান জানান, বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটা হলো, এবছর প্রাথমিকস্তরে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা হবে না। প্রাথমিকস্তরে বার্ষিক পরীক্ষা না নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ মূল্যায়ন করবে।

তবে কোন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হবে সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কোনো পদ্ধতি নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রাথমিকস্তরের বার্ষিক পরীক্ষার আয়োজন সম্পর্কে জানার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের সচিব, একজন অতিরিক্ত সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালকের ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

মহাপরিচালকের ফোনে খুদে বার্তা (এসএমস) পাঠিয়েও কোনো উত্তর মেলেনি। প্রাথমিকস্তরের বার্ষিক পরীক্ষা নিয়ে কোনো নির্দেশনা স্কুলে দেওয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জানান, মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা তারা পায়নি।

এই স্কুলের তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাইস্কুলে (মাধ্যমিক) সব ছেলেমেয়ের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। তাদের সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দেওয়া হলো। তাহলে প্রাথমিক শিক্ষা যারা দেখে, তারা কী ঘুমিয়ে আছে?’

রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার শিক্ষকরাও জানান, তারা এখনো এই স্তরের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কিছুই জানেন না। এই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক তুলসী দত্ত বলেন, ‘বছর শেষ হয়ে গেল। কদিন পরই নতুন ক্লাসে ভর্তি নেওয়া হবে। এখনো আমরা জানি না আমার সন্তানের পাস-ফেল কীভাবে নির্ধারণ হবে?’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযাযী, দেশে প্রাথমিকস্তরে মোট শিক্ষার্থী আছে ২ কোটি ১৯ লাখ ৩২ হাজার ৬৩৮ জন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে ১০ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রকাশ হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ষষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নিতে হবে। এর সঙ্গে ১০ম শ্রেণির প্রাকনির্বাচনী পরীক্ষা নেবে স্কুলগুলো। পরীক্ষার সিলেবাসও জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে