মাউশির অধীনে বেসরকারি হাইস্কুল
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাইস্কুলে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ২৫ নভেম্বর। ওইদিন থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করা যাবে। প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ভর্তির ওয়েবসাইটে (http://gsa.teletalk.com.bd) গিয়ে আবেদন করবে।
করোনার কারণে গত বছরের মতো এ বছরও বিদ্যালয় থেকে ভর্তি ফরম বিতরণ হবে না। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যসহ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) ওয়েবসাইটে (www.dshe.gov.bd) মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রথমবারের মতো এবার বেসরকারি হাইস্কুলে ভর্তি হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে। একজন শিক্ষার্থী ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবে। এবার কোনো ভর্তি পরীক্ষা হবে না। ডিজিটাল পদ্ধতিতে অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদনকারীদের নিয়ে লটারির আয়োজন করা হবে। ১৫ ডিসেম্বর হবে সরকারি হাইস্কুল আর বেসরকারি হাইস্কুলের লটারি হবে ১৯ ডিসেম্বর। ৩০ ডিসেম্বরে ভর্তির কাজ শেষ করা হবে। ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাস শুরু হবে।
জেলা সদর পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৮৮টি বেসরকারি এবং ৩৯২টি সরকারি হাইস্কুল এ কার্যক্রমের অধীনে আসছে। এডহক নিয়োগ না হওয়া সদ্য জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়গুলো চাইলে এই পদ্ধতিতে যুক্ত হতে পারবে। আর না হলে তাদেরকে অবশ্যই সরকার গঠিত সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কমিটির অধীনে ম্যানুয়ালি ভর্তির কাজ পরিচালনা করতে হবে। কিছুতেই পরীক্ষা নেয়া যাবে না।
মাউশি উপ-পরিচালক (মাধ্যমিক) আজিজউদ্দিন বলেন, এবারে প্রথমবারের মতো জেলা পর্যায় পর্যন্ত সব বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। পাশাপাশি আগের মতো সরকারি হাইস্কুলের ভর্তি কার্যক্রমও হচ্ছে। যেসব প্রতিষ্ঠানে প্রাক-প্রাথমিক স্তর আছে সেখানে স্কুলের পরিচালনা কমিটির অধীনে ভর্তি কার্যক্রম হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বেসরকারি হাইস্কুলে ভর্তিতে অনিয়ম, জালিয়াতি ও বাণিজ্য বন্ধে সরকারি তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থী ভর্তির এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য আসনের সংখ্যা চাওয়া হয়েছে। লটারিতে শূন্য আসনের সমসংখ্যক শিক্ষার্থী সুপারিশ পাঠানো হবে। এছাড়া অপেক্ষমাণ তালিকায়ও সমান সংখ্যককে নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশ করা হবে।
করোনার কারণে এবারে ভর্তির আবেদন ফি কমানো হয়েছে। চলতি বছর প্রতিটি বেসরকারি স্কুলে আবেদন ফি ছিল ২০০ টাকা আর সরকারি স্কুলে ১৭০ টাকা ধার্য ছিল। এবার দিতে হবে ১১০ টাকা।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি স্কুলের প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ১৮ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভর্তি করানো হবে। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভর্তি করানো যাবে। বেসরকারি স্কুলে ২১ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হবে। অপেক্ষমাণ তালিকা অনুযায়ী ২৮ থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল ও টেলিটক লটারির স্থান নির্ধারণ করবে। অনলাইন আবেদন ও ফি পরিশোধসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বেসরকারি বিদ্যালয় : জেলা পর্যায় পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ ভর্তি প্রক্রিয়ার অধীনে আনা হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানসংলগ্ন কমপক্ষে একটিসহ ৫টি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করা যাবে। নিজ প্রশাসনিক থানার বাইরে আশপাশের সর্বোচ্চ তিনটি প্রশাসনিক থানা ক্যাচমেন্ট এলাকা ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা যাবে। একই প্রতিষ্ঠানের দুই শিফটে আবেদন করলে দুটি প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে মর্মে ধরে নেওয়া হবে। আবেদনকারীরা আবেদনের সময়ে প্রতিষ্ঠান নির্বাচনকালে মহানগর পর্যায়ের জন্য বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলা সদরের সদর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবে। এক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করতে পারবে।
সরকারি বিদ্যালয় : সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৩৯২টি সরকারি বিদ্যালয় এ কার্যক্রমের অধীনে এসেছে। ঢাকা মহানগরে এবার আছে ৪৪টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি ফিডার শাখা। এবার জাতীয়করণ হওয়া আরও দুটি বিদ্যালয় যুক্ত হয়েছে। এবারও বিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছে (এ, বি এবং সি) করে ভর্তির কাজ সম্পন্ন হবে। আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের পাঁচটি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। এখান থেকে লটারির মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করা হবে।