আত্মগোপনে মেয়র আব্বাস বাহিনীর অস্ত্রধারী ক্যাডাররা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২১; সময়: ৯:৩১ অপরাহ্ণ |
আত্মগোপনে মেয়র আব্বাস বাহিনীর অস্ত্রধারী ক্যাডাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলীকে গ্রেপ্তারের পর তার অন্তত ৩৫ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার গা ঢাকা দিয়েছে।

আব্বাস বাহিনী নামের এই ক্যাডারদের দিয়েই চাঁদাবাজী, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, ছিনতাই, টেন্ডার ও বালু মহল নিয়ন্ত্রণ করতেন আব্বাস। তিনি জেলে থাকলেও মাসকাটাদীঘি বহুমুখী স্কুলের বেশকিছু জমি এখনো তার দখলে রয়ে গেছে।

মাসকাটাদীঘি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়’ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন মেয়র আব্বাস আলী। সেসময় প্রভাব খাটিয়ে স্কুলের জমি ১০ বছর মেয়াদে মাসে মাত্র দুই হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে বাবার নামে গড়ে তোলেন ‘আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুল’। কিন্তু গত চার বছরে এক টাকাও ভাড়া দেননি তিনি।

স্কুলের মার্কেটে স্ত্রী, মা এবং ভাইয়ের নামে নিয়েছেন দোকান বরাদ্দ। স্কুলের ভেতরে নিজেই খুলেছেন ক্যান্টিন। স্কুলেই চালাতেন কোচিং সেন্টার। সব ছাত্রকে বাধ্যতামূলকভাবে সেখানে ভর্তি হতে হতো। স্কুল মার্কেটে নিজের চেম্বারে রাতের বেলা বসতো মদের আসর।

কাটাখালী পৌরসভার মাসকাটাদীঘি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আক্তার হাসান জানান, বেশ কয়েক বছর ধরেই ভাড়া দিচ্ছেন না আব্বাস। এছাড়া স্কুল মার্কেটের দোকান নিজের খালাতো ভাইয়ের নামে বরাদ্দ দিয়ে নিয়ে নিজেই ব্যবহার করছেন। শুধু তাই নয়, রাতে ক্যাডারদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো স্কুল মাঠেই। তারা মানুষকে ধরে এনে করতো নির্যাতন।

কাটাখালী পৌরসভার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোতালেব জানান, এই বাহিনীকে দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানান অবৈধ কাজে ব্যবহার করতেন আব্বাস। এছাড়া রাতের আধারে স্কুল মাঠে বিভিন্নজনকে ধরে এনে নির্যাতন করার পাশাপাশি অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হতো বলেও জানান মোতালেব।

রাজশাহীর কাটাখালী পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ইসলাম জানান, অবৈধভাবে বিভিন্ন বালুমহালের দখল নিয়ে ব্যবসা করতেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে ধরে এনে স্কুল মার্কেটে থাকা নিজের চেম্বার ও টর্চারসেলে আটকে অত্যাচার করা হতো।

জমি দখল, চাঁদাবাজি, বালু মহল নিয়ন্ত্রণ, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ সংগঠিত করতে আব্বাসের ছিলো অন্তত ৩৫ জনের ক্যাডার বাহিনী। এদের অনেকেই এখন পলাতক।

আওয়ামী লীগ কর্মী আবু বাক্কার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আব্বাস জামিনে বের হয়ে যোগ দেন যুবলীগে। পরে তার নামে নাশকতা, বোমাবাজি, চাঁদাবাজিসহ অসংখ্য মামলা হয়। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনও করেন। তারপরও ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে গ্রেপ্তার হন তিনি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে