চাঁপাইনবাবগঞ্জে নৌকার সভায় সরকার পতনের ডাক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৪, ২০২১; সময়: ৭:৩০ অপরাহ্ণ |
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নৌকার সভায় সরকার পতনের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক : এবার নৌকার প্রধান নির্বাচনী ক্যাম্প থেকে জামায়াত নেতার সরকার পতনের ডাকের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন নির্বাচনে স্থানীয় চরবাগডাঙ্গা হাটে নৌকার প্রধান নির্বাচনী অফিসে প্রচারণা সভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় রফিক মোল্লা নামে এক জামায়াত কর্মী সরকারকে স্বৈরাচার অ্যাখ্যা দিয়ে একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের ডাক দেন।

তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবী ভুলঃবসত সরকারের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে বর্তমান চেয়ারম্যানকে উদেশ্য করে কথা গুলো বলা হয়েছে।

৪২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে জামায়াত নেতা রফিক মোল্লাকে হ্যান্ড মাইক নিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। এসময় তিনি উপস্থিত সকলের উদেশ্যে বলেন, আজ আমাদের এক দফা এক দাবী, স্বৈরাচার সরকার তুই কবে যাবি। স্বৈরাচার চেয়াম্যান তুই কবে যাবি। এটা আমাদের শ্লোগান থাকবে।

এসময় উপস্থিত মানুষের প্রশ্ন রেখে বলেন, কয় দফা? জিজ্ঞেস করেন তিনি। উপস্থিত মানুষ উচ্চ স্বরে উত্তর দেন ‘এক দফা’। রফিক মোল্লা আবার বলেন আগামী ৫ই জানুয়ারী আমার প্রমাণ করে দিব, আপামর জনতা কৃষক শ্রমিক জনতা, দোকানদার থেকে পানওয়ালা, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধা মা-বৃদ্ধ পিতা সবারই একটি কথা, হটাও সন্ত্রাস বাঁচাও দেশ। এদেশে সন্ত্রাস আর কেউ দেখ তে চাই না বলে দিগ-দিগন্তে জন রব উঠেছে।

এবিষয়ে কথা বলতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় চরবাগডাঙ্গ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী ওমর আলী সাথে। তার প্রধান নির্বাচনী অফিসে বক্তব্য দেয়া ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, ওই ব্যক্তির নাম রফিক মোল্লা। বর্তমানে সে চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। রফিক মোল্লার রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ওমর আলী তা বন্ধ করে দেন।

এদিকে এলাকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, ওমর আলী নৌকা প্রতীক পেলেও একমাত্র তার ভাই লতিফ ছাড়া ঘনিষ্ঠ আত্মীয় স্বজনরা অধিকাংশই সক্রিয়ভাবে জামায়াতে ইসলামি করেন। তাই জামায়াত নেতাকর্মীরাই এখন নৌকার ভোট করছেন। ওমর আলীর নির্বাচনী সভায় সরকার পতনের ডাক দেয়া রফিক মোল্লাও কট্টর জামায়াত। স্বভাববশতই সে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রফিক মোল্লা জামায়াত নেতা। বর্তমানে জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ থাকায় আগামী ৫ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য চরবাগডাঙ্গা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকার পক্ষে কাজ করছেন।

চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জামিরুল ইসলাম রফিক মোল্লার পরিচয় উল্লেখ করে জানান, সে আগে জামায়াতের ভোট করেছে। তবে জামায়তের সংগঠনে তার কোন পদ নাই। দীর্ঘদিন থেকে সে আওয়ামী লীগ করে।

ভিডিওর বিষয়ে তিনি বলেন, আমার জানামতে রফিক মোল্লা সরকারের বিপক্ষে বলেনি। সে বর্তমান চেয়াম্যানেকে স্বৈরাচারী বলতে গিয়ে ভুল করে সরকারকে বলে ফেলেছে। বর্তমান চেয়ারম্যান শাহিদ রানা এলাকার কোন উন্নয়ন করেনি বলে তার অভিযোগ। এই ক্ষোভ থেকে সে কথা গুলো বলেছে। তবে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেছে সেটা আমার জানা নেই।

তবে চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী শহিদ রানা বলেন, আমার আমলে সরকারি অনুদান সহায়তা যা এসেছে তার মেম্বারদেরকে আনুপাতিকহারে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কারো শক্তি নেই বলতে পারে যে, সরকারি অনুদান ও সাহায্যের একটি টাকাও আমি পকেটে করেছি। আমি সাধ্যমতো এলাকার উন্নয়ন করেছি।

শহিদ রানার আরও দাবি, তার বাপ দাদারাই আদি আওয়ামী লীগ। বরং ওমর আলীর পুরো জেনারেশান বিএনপি ও জামায়াত করেন। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আমার সঙ্গে আছেন। তারা আমার মোটরসাইকেল প্রতীকের জন্য ভোট করছেন।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে