১১ মাসে ডিজিটাল আইনে ২২৫ মামলা, ৬৮টি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১; সময়: ১০:১২ অপরাহ্ণ |
১১ মাসে ডিজিটাল আইনে ২২৫ মামলা, ৬৮টি সাংবাদিকের বিরুদ্ধে

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : অনলাইনে অপতথ্য ও গুজব ছড়ানো প্রতিরোধে বাংলাদেশের প্রতিটি মিডিয়া হাউজে ‘ফ্যাক্ট-চেকিং টুলসের’ ব্যবহার ও ‘ফ্যাক্ট-চেকার’ তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর উদ্যেগে গঠিত ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট ফ্রিডম ইনিশিয়েটিভ (বিআইএফআই) ওয়ার্কিং গ্রুপের পরামর্শ সভায়।

দেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রধান হুমকিগুলো মোকাবেলায় গণমাধ্যমের করণীয় বিষয়ে বিআইএফআই ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে সাংবাদিক এবং গণমাধ্যমের নির্বাহীদের নিয়ে এ পরামর্শ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় বক্তারা ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ও অনলাইনে তথ্য যাচাইয়ে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের জন্যও মিডিয়ার নীতি-নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আর্টিকেল ১৯-এর তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, সংস্থাটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া ২২৫টি মামলার ঘটনা রেকর্ড করেছে। বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার ৪১৭ জন ব্যক্তি এসব মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬৮ জন সাংবাদিক। ১৫ জন সাংবাদিক এই আইনের আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছেন।

সভায় বিআইএফআই ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য ও টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের সভাপতি রাশেদ মেহেদী ‘বাংলাদেশে ইন্টারনেট স্বাধীনতার হুমকি মোকাবেলায় মিডিয়ার ভূমিকা’ শিরোনামে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তিনি বলেন, ডিজিটাল অধিকার, তথ্য প্রকাশ ও পাওয়ার স্বাধীনতা, ইন্টারনেটে প্রবেশগম্যতার অধিকার, ইন্টারনেট সেন্সরশিপ থেকে মুক্ত থাকা এবং সবার জন্য সমান সুযোগের ইন্টারনেট সেবাকে বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট স্বাধীনতার পাঁচটি ভিত্তি ও অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বাংলাদেশে এই পাঁচটি অধিকার নিশ্চিতে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা, ইন্টারনেট স্বাধীনতার ধারণা প্রচার করা এবং মানুষকে ডিজিটাল অধিকার ও নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতন করার মাধ্যমে মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, সত্য গোপন করা যায় না। ভুল তথ্য প্রদানকারী মিডিয়ার ওপর থেকে মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলে। তাই সংবাদ প্রকাশে গণমাধ্যমকে আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।

আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, গণমাধ্যম ও ইন্টারনেটের স্বাধীনতা পরস্পর অবিচ্ছেদ্য। বর্তমানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি নিরাপদ, বৈষম্যহীন ও অবারিত ইন্টারনেট ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যম ও ইন্টারনেট উভয়ের স্বাধীনতার জন্যই হুমকি।

অনুষ্ঠানে ওয়ার্কিং গ্রুপের পক্ষে আরও বক্তব্য দেন ড. সৈয়দা আইরিন জামান, ব্যারিস্টার সৈয়দ এজাজ কবির, নাজনীন নাহার এবং তৌফিক আহমেদ শাহিন। সভায় সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য দেন রিপোর্টার্স উইদআউট বর্ডারের বাংলাদেশ প্রতিনিধি সেলিম সামাদ, অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাহান্ননিউজ ডটকমের সম্পাদক বিভাষ বাড়ৈ, চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের বার্তা প্রযোজক সাইফুল ইসলাম সোহাগ, দুরন্ত টিভির গবেষণা ব্যবস্থাপক রুহিনা তাসমনি অনু, নিউ এজের সাংবাদিক মুকতাদির রশিদ রোমিও, ডেইলি স্টারের সাংবাদিক জাইমা ইসলাম, ডেইলি আওয়ার টাইমের প্রধান প্রতিবেদক তাপসী রাবেয়া আঁখি এবং ইত্তেফাকের সাংবাদিক রাবেয়া বেবি।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে