রাজশাহীতে লফসের এ্যাডভোকেসি সভা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২২; সময়: ৭:৫৮ অপরাহ্ণ |
রাজশাহীতে লফসের এ্যাডভোকেসি সভা

নিজস্ব প্রতিবেদক : লফস আয়োজিত হরিজন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা, শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপনে সুশীল সমাজের সাথে এ্যাডভোকেসি সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৯ জানুয়ায়ী বেসরকারী উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা লেডিস অর্গানাইজেশন ফর সোসাল ওয়েলফেয়ার লফস এর আয়োজনে দাতা সংস্থা দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় হরিজন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা, শান্তি ও সম্প্রীতি স্থাপনে বাধা ও বৈষম্য নিরসনে এ্যাডভোকেসী প্রকল্প এর আওতায় সুশীল সমাজের সাথে এ্যাডভোকেসি সভা নগরীর রানীবাজারস্থ এস.কে ফুড ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত হয়।

এ্যাডভোকেসি সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিতাই লাল বাছাড়, অধ্যক্ষ, বরেন্দ্র কলেজ, রাজশাহী ও এ্যাড. শাহিনুল হক, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, রাজশাহী জেলা। সভার সভপিতত্ব করেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শাহানাজ পারভীন।

এ্যাডভোকেসি সভা বক্তাগন হরিজন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠির ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতি স্থাপনের ঐক্যব্ধ হওয়ার আহবান জানান। সভায় হরিজন জনগোষ্ঠির শিশু সস্তানদের সাথে বিদ্যালয়ে অন্যান্য শিশুরা স্বাভাবিক ভাবে মেলামেশা করতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দবোধ করে না, অভিভাকদের অসচেনতায় বাল্য বিবাহ অহরহ হচ্ছে, কর্মসংস্থান না থাকায় পৈতৃক পেশাতেই থাকতে বাধ্য হচ্ছে, ধর্ম পালনে স্বাধীনতা থাকলেও অবাধ বলা যাবে না বিষয়গুলো নিয়ে অতিথিবৃন্দ আলোচনা করেন।

আলোচকরা বলেন দারিদ্র্যতা শিক্ষার সুযোগ গ্রহণের অন্যতম বাধা হলেও সামনে এগিয়ে যেতে হবে বর্তমান সরকার সকল সম্প্রদায়ের পাশে রয়েছে। সম্মানিত অতিথি নিতায় লাল বাছাড় বলেন হরিজনরা সরকারি খাসজমিতে বসবাস কওে, হিন্দু ধর্মের শেষ বর্ণ শূদ্রে জন্মগ্রহণ করায় তারা সাধারণদের সঙ্গে চলতে পারে না। যুগের পর যুগ অস্পৃশ্যতার বেড়াজালে আবদ্ধ থেকে প্রতিবেশী বাঙালিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে এখনও যথেষ্ট বাঁধা রয়েছে।। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান, খ্রিস্টান সব ধর্মাবলম্বীদের কাছে এরা শুধুই মেথর হিসেবে পরিচিত যা আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন। সভায় এ্যাড, শাহিনুল হক মুন ইউনিসেফের তথ্য মতে, বাংলাদেশে ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয় ৬৬ শতাংশ মেয়েদের।

হরিজনদের মাঝে বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিয়ের সংখ্যা অনেক বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১২ বছরের মধ্যে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয় বিষয়টি তুলে ধরেন। মুক্ত আলোচনায় অংশ গ্রহনকারী হরিজন সম্প্রদায়ের হেতম খাঁ পল্লীর হরিজন সার্বজনীয় সাংস্কৃতিক সংঘ এর সভাপতি শ্রী জীবন বাবু বলেন আমরা হোটেলে বসে এক সাথে চা খেতেও পারিনা, সমাজে আমরা অন্য সম্প্রদায়ের কাছে তুচ্ছ তাচ্ছিলতার শিকার হই।

চুমকি রানী বলেন আমাদের বাচ্চারা স্কুলে ভর্তি হয় কিন্তু ঠিকানায় মেথরপট্টি থাকায় অবহেলার শিকার হই। স্বর্ন ব্যবসায়ী প্রনব সরকার বলেন হরিজনরা আমাদের সমাজের একটি অংশ তাদেরকে পিছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্বব নয়। তিনি উল্লেখ করেন হরিজন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠির অকান্ত পরিশ্রমের ফসল আজ রাজশাহী গ্রীন ও ক্লীন সিটি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষন ও পূর্নবাসন এর কর্মকর্তা আলফাতুনেছা বলেন সোস্যাল মিডিয়ার নিজেদের সক্রিয়তার মাধ্যমে নিজ অধিকার আদায়ে ক্যেেম্পইন করা যাতে সমাজের সকল শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে তাদের দাবী পৌছানো সম্ভব হয়।

এ্যাডভোকেসি সভার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লফস এর প্রোগ্রাম এসিসটেন্ট মেহেদি হাসান। সঞ্চালনায় ছিলেন সংস্থার প্রোগ্রাম এসিসটেন্ট সুলতানা রিজিয়া। সভায় ৩০জন বিভিন্ন পেশার জনসাধারণ অংশ গ্রহন করে। সভা স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়। সকলের মাঝে করোনা উপকরণ হ্যান্ড ওয়াস বিতরণ করা হয়।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে