যাবজ্জীবন আসামির পরিবর্তে জেল খাটছেন ফুফাতো ভাই, র‍্যাবের হাতে ধরা

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২; সময়: ৯:০৭ অপরাহ্ণ |
খবর > জাতীয়
যাবজ্জীবন আসামির পরিবর্তে জেল খাটছেন ফুফাতো ভাই, র‍্যাবের হাতে ধরা

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : বারো বছর আগে ২০১০ সালে কদমতলী থানাধীন আউটার সার্কুলার রোডে নোয়াখালী পট্টিতে, নান্নু জেনারেল স্টোরের সামনে বেলা আনুমানিক ২টার সময় একটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। আলোচিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিগণ বড় সোহাগ (৩৪), পিতা-গিয়াস উদ্দিন কাঙ্গাল, মামুন (৩৩), পিতা-মৃত আলাউদ্দিন শেখ, ছোট সোহাগ (৩০) এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জন।

আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হুমায়ুন কবির টিটু’কে গুলি করে। গুলিটি টিটুর মাথার ডান পাশে লেগে গুরুতর জখম হয় সে। আহত টিটুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে টিটুর পরিবার কদমতলী থানায় নিয়মিত মামলা দায়ের করে।

সোহাগ (৩৪) অত্র মামলার ১ নং আসামি এবং সে গত ২২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মামলার প্রথম আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয় এবং ১৬ মে ২০১৪ তারিখে কারাগার হতে জামিনে মুক্তি লাভ করে। সে জামিন লাভ করার পর থেকে পলাতক রয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখ ১ নং আসামি সোহাগ (৩৪) এর অনুপস্থিতিতে বিজ্ঞ আদালত রায় প্রকাশ করেন। বিজ্ঞ আদালত সোহাগের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোহাগকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

আদালতের রায় প্রকাশের পর বড় সোহাগ পরিকল্পনা মোতাবেক তার ফুফাতো ভাই নকল সোহাগ (মো. হোসেন (৩৫), পিতা-মৃত হাসান উদ্দিন) ১ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে আদালতে আত্মসমর্পণ পূর্বক জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মাদকাসক্ত হোসেন মাসিক ৫,০০০/- (পাঁচ হাজার) টাকার বিনিময়ে জেল হাজতে যায়।

উল্লেখ্য , মো. হোসেন (৩৫) মাদকাসক্ত হওয়ায় বাল্যকাল থেকেই প্রকৃত সোহাগের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। প্রকৃত সোহাগ মো. হোসেনকে জেল হাজতে প্রেরণের পূর্বে নকল সোহাগকে ২-৩ মাসের মধ্যে বের করে নিয়ে আসবে মর্মে আশ্বস্ত করে।

উপরোক্ত বিষয়টি নিয়ে ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে র‍্যাব-১০ এর অপারেশন টিম ও র‍্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা টিম কাজ করে আসছিল। এরই মধ্যে বিশেষ দায়রা আদালত ও দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪, প্রকৃত আসামির (সোহাগ) বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে অধিনায়ক, র‍্যাব-১০, ধলপুর, ঢাকা বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করেন।

প্রকৃত সোহাগ উল্লিখিত ঘটনা প্রকাশের বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে সুকৌশলে দেশত্যাগের চেষ্টা শুরু করে। এর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করে পাসপোর্ট তৈরি করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা সংগ্রহ করে। দেশত্যাগের ক্ষেত্রে করোনার টিকা বাধ্যতামূলক হওয়ায় শনিবার (২৯ জানুয়ারি) করোনার ২য় ডোজ গ্রহণ করার জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল মিডফোর্ড হাসপাতাল আসে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাব-১০, সদর কোম্পানি, অপারেশন টিম র‍্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় গত ২৯ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল মিডফোর্ড হাসপাতাল এলাকা হতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অত্র হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সশ্রম সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামী সোহাগ (বড় সোহাগ) কে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত প্রকৃত আসামি সোহাগ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২ টি হত্যা মামলা, ২ টি অস্ত্র মামলা ও ৬ টি মাদক মামলাসহ সর্বমোট ১০ টি মামলা রয়েছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে