ছিনতাইকারির হাতে পুলিশের ওয়াকিটকি, আরএমপিতে তোলপাড়

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩১, ২০২২; সময়: ১:৪৮ অপরাহ্ণ |
ছিনতাইকারির হাতে পুলিশের ওয়াকিটকি, আরএমপিতে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী নগরে টাকা ও মুঠোফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের ভুয়া পরিচয় দেয়া দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে নগরের শিরোইলের শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুজনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় দুই ভাইয়ের কাছ থেকে পুলিশের দুটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। পরে ছিনতাই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ছিনতাইকারির কাছ থেকে ওয়াকিটকি উদ্ধারের ঘটনায় রাজশাহী পুলিশে তোলপাড়া চলছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন, মাভেল ইসলাম ওরফে মাভেল (২৪) ও তাঁর ভাই নেহাল ইসলাম ওরফে নিরো (২২)। তাঁরা নগরের শাহমখদুম থানার বড়বনগ্রাম বাগানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। দুজনকে রোববার দুপুরে আদালতে নেয়া হয়। বোয়ালিয়া থানা পুলিশ দুজনের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুই ছিনতাইকারীর কাছে কী করে পুলিশের ওয়াকিটকি গেল, এ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিটা থানায় ওয়াকিটকির সংখ্যা যাচাই করা হচ্ছে। সেগুলোর সংখ্যা ঠিক আছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। কোনো থানায় কিংবা পুলিশ ফাঁড়িতে ওয়াকিটকি কম আছে কি না, তা জানতে চেয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। এ বিষয়ে একটি বিশেষজ্ঞ দলও কাজ শুরু করেছে।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজশাহীর কর্ণহার এলাকার বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম এমপি সাফারী নামের একটি কোচে ঢাকা থেকে রাজশাহীর শিরোইল বাসস্ট্যান্ডে নামেন। এ সময় তরিকুলকে টানতে টানতে টার্মিনালের ভেতরে নিয়ে যান মাভেল ইসলাম ও তাঁর ভাই নেহাল ইসলাম।

ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁরা তরিকুলের শরীর তল্লাশির নামে পকেটে থাকা ছয় হাজার টাকা ও একটি মুঠোফোন কেড়ে নেন। গাঁজা ও ইয়াবা পাওয়া গেছে বলে ভয় দেখিয়ে তরিকুলের মুঠোফোন থেকে পরিবারের সদস্যদের কাছে বিকাশে আরও টাকা চাওয়া হয়। তরিকুল সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে ওয়াকিটকি বের করে তাঁকে মাদক মামলা দিয়ে চালান করার ভয় দেখানো হয়।

টার্মিনালে এই ঘটনা দেখে উৎসুক লোকজন ভিড় করেন। এর মধ্যে ভিড় দেখে সেখানে বোয়ালিয়া মডেল থানা-পুলিশের একটি টহল দল পৌঁছায়। পুলিশ দেখে ওই দুজন পালানোর চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আটক করা হয়। পরে এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তরিকুল ছিনতাই মামলা করেন।

নগর পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মাভেল ও নেহাল নগরের একটি থানার এক ওসি ও এসআইয়ের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। সম্প্রতি ওই দুজনকে অন্য স্থানে বদলি করা হয়েছে। পুলিশের সোর্স হিসেবে এই দুজন ছিনতাই ও মাদক ব্যবসা করে আসছিলেন। তাঁদের নামে আগেই অন্তত চারটি মামলা আছে। ওয়াকিটকি পাওয়ার ঘটনায় গতকাল দিনভর থানায় রেখে দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে আজ দুপুরে আদালতে তুলে তাঁদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, আটক দুজনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ছিনতাই মামলা করেছেন। এই মামলায় আজ আদালতে অভিযুক্ত দুজনের বিষয়ে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন চাওয়া হয়েছে। তবে আজ রিমান্ড আবেদন শুনানি হয়নি। পুলিশের ব্যবহৃত ওয়াকিটকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুলিশের কি না, এটা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এই নিয়ে যাচাই-বাছাই চলছে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, পুলিশের বা আসলে কোনো ওয়াকিটকি কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে তাঁদের বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে