রাবির হলে গতি নেই ইন্টারনেটের
অমর্ত্য রায়, রাবি : নিজের বিছানায় শুয়ে ফেসবুক থেকে একটি লিংকে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন শামসুল ইসলাম সেতু। চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ লক্ষ্যণীয়। কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলতে লাগলেন, দেড় মিনিটেরও বেশি সময় হয়ে গেছে অথচ একটা পেইজ এখনোও লোডিং অবস্থায় আছে।
তিনি অনলাইন ভিত্তিক একটি সংবাদ মাধ্যমের লিংকে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন। পাশের বেডে শুয়ে থাকা আরেক শিক্ষার্থী জাকির প্রায় চার মিনিট ধরে একটি ইমেইল পাঠানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এটি কোন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল বা পাহারি অঞ্চলের পরিস্থির চিত্র নয়, এটি বাংলাদেশের সনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ৩৫৮ নাম্বার রুমের চিত্র। শুধু শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল নয়, কমবেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলেই এমন পরিস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
হলগুলোর সবগুলোতেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেও এর গতি খুবই নিম্নমানের। অনেক ক্ষেত্রে রুমের ভিতরে সংযোগ পায় না এমন অভিযোগও রয়েছে হলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের। ফলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা থাকার পরেও শিক্ষার্থীদের আলাদাকরে কিনতে হচ্ছে মোবাইল ডাটা প্যাকেজ।
অথচ কিছুদিন আগেও রাবিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনি বলেছিলেন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবযুগে প্রবেশের প্রধান সহায়ক থাকবে অবাধ তথ্য প্রবাহ এবং তার প্রাপ্তি। কিন্তু সেই কাঙ্খিত তথ্য প্রাপ্তিতে পদে পদে শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন জটিলতায়। ব্যয় হচ্ছে তাদের শত শত কর্মঘন্টা।
হলগুলোতে ইন্টারনেটের এই বেহাল দশা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগে যোগাযোগ করলে বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ বাবুল ইসলাম জানান মূলত ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে হলগুলোকে প্রতি ফ্লোরে একটি করে ব্রাউজিং রুম করে দেওয়া যায় কিনা তা পরিক্ষা করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া রাউটারের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসন থেকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিডি লিংকের সহায়তায় একটি ইন্টারনেট সংযোগ ডিজাইন প্রণয়ন করা হয়েছে যা বাস্তবায়িত হলে এই সমস্যা আর থাকবে না বলে আশা করা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারনেট উন্নতিকরনের কাজটি চলমান অবস্থায় আছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে বিডি লিংক হলসহ অন্যান্য ভবনগুলো পরিদর্শন করেছে এবং সমস্যাগুলো চিহ্নিত করেছে। আশা করি অতি দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে।